গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন কেন নয়

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

পরিবেশ রক্ষায় গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে ঢাকাসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সাত সদস্যবিশিষ্ট পৃথক কমিটি গঠন প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার এ রুল দেন।

‘২০৪৪ গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বন বিভাগের, যশোর রোড উন্নয়ন কমিটির প্রতিবাদ’ শিরোনামে ২ মে প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘যশোরে ২ হাজারের বেশি গাছ কাটার দরপত্র বন বিভাগের’ শিরোনামে অপর একটি দৈনিকে ৪ মে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমে আসা এসব প্রতিবেদন যুক্ত করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে তিন আইনজীবী ৫ মে রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল ও নাছরিন সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. রেজাউল হক।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার শহরে গাছ কাটার ক্ষেত্রে পরিবেশবাদী, পরিবেশবিশেষজ্ঞ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞানের অধ্যাপকের সমন্বয়ে সাত দিনের মধ্যে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করতে পরিবেশসচিবের প্রতি কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। জেলার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা পরিবেশ কর্মকর্তা, সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি বা সম্পাদক এবং সিভিল সার্জন সমন্বয়ে সাত দিনের মধ্যে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের জন্য সার্কুলার ইস্যু করতে জনপ্রশাসনসচিবকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে কলেজের অধ্যক্ষ, সমাজকর্মী, পরিবেশবাদী, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলীর সমন্বয়ে সাত দিনের মধ্যে সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠনের জন্য সার্কুলার ইস্যু করতে জনপ্রশাসনসচিবকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

রুলে ব্যক্তিমালিকানাধীন গাছ ব্যতীত সারা দেশে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং ঢাকা শহরসহ অন্যান্য জেলা-উপজেলা পর্যায়ে গাছ কাটা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ২০০৪ সালের সামাজিক বনায়ন বিধিমালার বিধানে গাছ লাগানোর চুক্তিভুক্ত পক্ষকে অর্থ প্রদানের বিধান যুক্ত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিবেশসচিব, স্থানীয় সরকারসচিব, জনপ্রশাসনসচিব, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বন সংরক্ষকসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।