৩৫ কেজির পোয়া মাছটির দাম সাত লাখ টাকা

কক্সবাজারের মহেশখালীতে জেলেদের জালে ধরা পড়া এই পোয়া মাছটির দাম হাঁকা হচ্ছে সাত লাখ টাকা। আজ সকালে
ছবি: সংগৃহীত

মাছটির ওজন প্রায় ৩৫ কেজি। দাম হাঁকা হচ্ছিল সাত লাখ টাকা। এটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই। কেউ মুঠোফোনে ভিডিও করছিলেন, কেউ ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছিলেন। আজ শুক্রবার দুপুরে কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের কালাগাজির বাজারে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে।

জটলা দেখে এগিয়ে যাওয়ার পর জানা গেল, সোনালি পোয়া মাছটি জালে ধরা পড়ে আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে। বঙ্গোপসাগরের জামিরা খাল নামের স্থানে জাল ফেলার পর এই মাছ উঠে আসে। পরে কূলে ফিরে এসে বাজারে তোলা হয় সোনালি পোয়া মাছটি। মুহূর্তেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় জমে যায়। চলতে থাকে দরাদরি। তবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মাছটি বিক্রি হয়নি।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ারের মালিকানাধীন ‘এফবি বাবু মঞ্জিল’ নামের একটি ফিশিং বোট নিয়ে আটজন জেলে সাগরে মাছ ধরতে যান। কূল থেকে পশ্চিমে দুই ঘণ্টা বোট চালিয়ে তাঁরা পৌঁছান জামিরা খালে। সেখানে জাল ফেলা হয়। চলতে থাকে অপেক্ষা। পরে আজ সকাল আটটার দিকে কিছু জাল তোলার পর সোনালি পোয়া পাওয়া যায়।

আটজনের দলে ছিলেন জেলে মাহবুবুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এত বড় সোনালি পোয়া সচরাচর ধরা পড়ে না। মাছটির চাহিদা বেশি। তাই সাত লাখ টাকা দাম হাঁকা হয়েছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম শহরের কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা এলে মাছটি বিক্রি হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের অধ্যাপক মো. শাহাদাত হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সামুদ্রিক মাছ নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁর লেখা ‘মেরিন ফিশেস অব বাংলাদেশ’ বইতে মাছটি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। বইটি প্রকাশিত হয় ২০২২ সালে। মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে জানান, মাছটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘অটোলিথইডিস বিয়ারিটাস’ (Otolithoides biauritus)। স্থানীয়ভাবে মাছটি লম্বু পোয়া বা সোনালি পোয়া নামে পরিচিত। এটি সাধারত ৪ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। গভীর সমুদ্রে বড় জালের মাধ্যমে এই মাছ ধরা হয়।

মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, মাছটির ফুলকা থেকে সার্জিক্যাল সুতা (অস্ত্রোপচারে ব্যবহৃত সুতা) তৈরি হয়। এই সুতা শরীরের অভ্যন্তরে কাটাছেঁড়ার সেলাইয়ে ব্যবহার করা হয়। কারণ, সুতাটি শরীরের সঙ্গে সহজেই মিশে যায়। তাই এই মাছের চাহিদা ও দাম বেশি।

ফিশিং বোটের মালিক স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, মাছটি কোল্ড স্টোরেজে রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের বেশ কিছু ব্যবসায়ী মাছটি কেনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।