২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

মরা খালে ‘প্রাণ’ ফেরালেন স্বেচ্ছাসেবীরা

লক্ষ্মীপুরের বিরেন্দ্র খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। দীর্ঘদিন বর্জ্যে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ ছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার রামগঞ্জ পৌর এলাকায়ছবি: সংগৃহীত

প্রায় দুই যুগ পর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ-হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রবাহিত বিরেন্দ্র খালের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়েছে। ১৫ দিন ধরে প্রায় দুই কিলোমিটার খাল স্থানীয় ব্যবসায়ী ও নিজেদের অর্থে স্বেচ্ছাশ্রমে পরিষ্কার করেছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা। এতে অংশ নেন রামগঞ্জ ব্লাড ডোনারস ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।

গত ২৮ আগস্ট থেকে রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ কার্যক্রম শুরু হয়। কাজ পুরোপুরি শেষ হতে আরও কয়েক দিন লাগতে পারে বলে জানা যায়। স্বেচ্ছাশ্রমের এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন ইসলাম। শারমিন ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খালটি সংস্কার হয়নি। এতে ময়লা-আবর্জনা ও পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতাসহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। স্বেচ্ছাসেবীরা এ উদ্যোগ নেওয়ার কারণে মানুষ নানাভাবে উপকৃত হবেন।

দীর্ঘদিন বর্জ্য জমে খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ ছিল। এতে খালের ভেতর বাঁশের খুঁটি পুঁতে অবৈধ ঘর তুলেছিলেন স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন। সামান্য বৃষ্টি হলেই খালের পাশে গড়ে ওঠা বাগানবাড়ি বস্তির ঘরগুলো ময়লা পানিতে ডুবে যায়। এবারের বন্যায় পুরো রামগঞ্জ উপজেলা ডুবে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, ময়লা অনেকটা পরিষ্কার করায় পানিপ্রবাহ বেড়েছে, তবে খাল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হয়ে এলে দুর্গন্ধ কমে আসবে বলে জানান স্বেচ্ছাসেবীরা।

পরিষ্কারের পর পানিপ্রবাহ বেড়েছে খালে। গতকাল বৃহস্পতিবার রামগঞ্জ পৌর এলাকায়
ছবি: সংগৃহীত

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও তরুণ-যুবকদের এমন কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁরা বলছেন, স্বেচ্ছাসেবীদের এমন উদ্যোগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দীর্ঘদিন ধরে খালপাড়ে ব্যবসা করছেন সাইফুল ইসলাম ও মাহবুব রহমান। তাঁরা জানান, খালটি রামগঞ্জ পৌর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। একসময় খালের পানিতে সব বয়সী মানুষেরা গোসল করতেন। ঘরের কাজেও খালের পানি ব্যবহার করা যেত। খালে ছোট-বড় অনেক নৌকাও চলাচল করত। কিন্তু দেড় যুগের বেশি সময় ধরে দখল ও দূষণের কারণে ঐতিহ্যবাহী খালটি এখন নালায় পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধের কারণে খালের কাছে দাঁড়ানো যায় না। স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে খালের প্রাণ আবার ফিরে আসতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।

খাল সংস্কারের কাজে অংশ নেওয়া রামগঞ্জ ব্লাড ডোনারস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ ফারুক বলেন, ‘দুই যুগের বেশি সময় ধরে খালটি সংস্কার করা হয়নি। ময়লা-আবর্জনায় খালে পানি আটকে এবারের বন্যায় অনেক মানুষ পানিবন্দী হন। আমরা গ্রামের যুবকেরা প্রাথমিকভাবে সংস্কারকাজ শুরু করছি। এক্সকাভেটর (খননযন্ত্র) সংগ্রহ করে, এটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, সবাই এর সুফল পাবেন।’