ঢামেকে প্রতিদিনই ভর্তি হচ্ছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী

হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীফাইল ছবি

ঝিনাইদহের মহেশপুরের বাসিন্দা মো. সোলায়মান (১৬) তিন দিন আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এই কিশোর স্থানীয় দুটি হাসপাতাল ঘুরে ঢাকায় এসেছে। বছরের শেষ সময় হয়ে এলেও প্রতিদিনই হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল সোমবার ঢামেক হাসপাতালে সোলায়মান ও তার মা শুকুরনের সঙ্গে কথা হয়। এই কিশোর প্রথমে ঝিনাইদহে এবং পরে মাগুরার একটি হাসপাতালে যায়। জ্বর, বমি, শরীরব্যথার মতো লক্ষণ ছিল। সোলায়মানের মা জানান, এখন কিছুটা সুস্থ হলেও তাঁর ছেলের প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে।

দিনমজুরি করা সোলায়মান বুঝতে পারছে না কীভাবে তার ডেঙ্গু হলো। তাদের এলাকায় কারও ডেঙ্গু হয়েছে বলে সে শোনেনি।

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা আলী হাসানের ডেঙ্গুর সঙ্গে নিউমোনিয়াও ধরা পড়েছে। ১৫ দিন আগে তাঁরা ঢামেক হাসপাতালে এসেছেন। তাঁর স্ত্রী পপি খাতুন জানান, তাঁরা খানপুর এলাকায় থাকেন। সেখানে আশপাশের অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এমনকি তিনি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। সিটি করপোরেশন থেকে মাঝেমধ্যে ওষুধ ছিটানো হলেও তাতে কাজ হয় না বলে মনে করেন তিনি।

পোশাকশ্রমিক আফরোজা খাতুনও নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসক দেখিয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু গত শুক্রবার তাঁর শরীর অনেক খারাপ হয়। তখন ঢামেক হাসপাতালে চলে আসেন। এখন কিছুটা ভালো বোধ করলেও দুর্বলতা কাটেনি। আফরোজাও জানান, তাঁর এলাকায় অনেক ডেঙ্গু রোগী আছেন।

হাসপাতালে পুরুষ রোগীর চেয়ে নারী রোগী কম দেখা গেছে। পুরুষ ওয়ার্ডে দেখা যায়, নার্সরা রোগীদের মশারি টানিয়ে রাখার জন্য তাগাদা দিচ্ছিলেন। শয্যা না পেয়ে অনেকে মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের হাসপাতালে নভেম্বর মাসে এ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৫৫৬ জন। এর মধ্যে ১৮ জন মারা গেছেন। এখনো ভর্তি আছেন ১২২ জন। তিনি জানান, ডেঙ্গু নিয়ে চলতি বছর এ হাসপাতালে ভর্তি হন ২ হাজার ৯৭৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭৬ জন। তাঁদের ৫১ জন নারী আর পুরুষ ২৫ জন।