সাভারের ঘটনাটি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে প্রথমে আমার চোখে পড়েনি। পরে খবরটি খুঁজে বের করে পড়লাম। খবরে কোনো ভুল ছিল না। ফেসবুক পোস্টে ছবি ও উদ্ধৃতির যে অসংগতি, প্রথম আলো তা দ্রুত প্রত্যাহার করে দেয়। অনলাইনে প্রতিবেদনের সঙ্গে সংশোধনী যুক্ত করে বিষয়টি জানানো হয়। তারপরও সাংবাদিককে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং কারাগারে পাঠানোয় শঙ্কার পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে এখন থেকে যেসব সাংবাদিক মাঠপর্যায়ে কাজ করেন, তাঁরা খবর সংগ্রহ করতে ভয় পাবেন। এ ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা, পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানকে ‘হুকুমের আসামি’ করা উদ্বেগজনক ঘটনা।
বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের দুই ধরনের ভাবমূর্তি আছে। অনেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির প্রশংসা করছেন, অন্যদিকে মানবাধিকার পরিস্থিতিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়া নিয়ে তাঁরা উদ্বেগও জানাচ্ছেন। প্রশাসনের ভেতরে সব সময় কিছু লোক থাকেন, যাঁরা অতি উৎসাহী হয়ে কাজ করেন। ধরে আনতে বললে বেঁধে আনেন।
প্রথম আলোর বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে এখন দেশের বাইরে যে তোলপাড় হচ্ছে, তা সরকারের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এতে বহির্বিশ্ব ভাববে বাংলাদেশে স্বাধীন চিন্তার ওপর খড়্গ ঝুলছে। আমরা আশা করব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংযত হবে এবং সাবধানতা অবলম্বন করবে।
এ ধরনের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আইনের স্বাভাবিক রীতি হলো কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েই করতে হবে। প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের ক্ষেত্রে সেটি মানা হয়নি।
এ ধরনের ঘটনায় আমরা যারা লেখালেখি করি, সভা–সেমিনারে কথা বলি, আমরাও তো ভয় পেয়ে যাব। এ ধরনের হয়রানিমূলক মামলা আর হবে না, শামসুজ্জামান ন্যায়বিচার পাবেন, এটাই প্রত্যাশিত।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার