আলোচিত ‘শরীফার গল্পের’ পরিবর্তে অন্য গল্প যুক্ত হতে পারে
সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আলোচিত ‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করায় এখন সেই গল্পের পরিবর্তে অন্য কোনো গল্প যুক্ত করার কথা ভাবছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে এমন ভাবনার কথা জানা গেছে। সূত্রটি জানিয়েছে, হিজড়া জনগোষ্ঠীর বিষয়ে মানবিক হতে কমিটিই অন্যভাবে গল্প দিতে বা তথ্য দিতে সুপারিশ করেছে ।
সপ্তম শ্রেণির ওই বইয়ে মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা অধ্যায়ে ‘শরীফার গল্প’ শীর্ষক গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটির সূত্রে জানা গেছে কয়েক দিন আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ভুল উল্লেখ করে কমিটির পক্ষ থেকে এই গল্পটি বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এখন মন্ত্রণালয় পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেবে।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন কমিটির সুপারিশ দেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক একটি পাঠ রয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক এক অনুষ্ঠানে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে গল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঁচ সদস্যের ওই কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবদুর রশীদ।
জানতে চাইলে অধ্যাপক আবদুর রশীদ তাঁদের প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু বলেননি। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা প্রতিটি শব্দ ও বাক্য বিশ্লেষণ করেছেন। এখন প্রতিবেদনের কতটুকু রাখবে সেটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।
উদীচীর প্রতিবাদ
‘শরীফার গল্প’ বাদ দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এ সুপারিশের প্রতিবাদে আগামীকাল শনিবার বিকেল পাঁচটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, গল্পটিতে পরিবর্তন আনা হলে তা পক্ষান্তরে মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে।