সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি–সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত (পেপার ফ্রি) বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী রোববার (৫ জানুয়ারি) থেকে এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) থেকে হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি–সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল প্রয়াত এ এফ হাসান আরিফের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তা শুরু করা সম্ভব হয়নি।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, সব ধরনের কাগজপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করে পেপার ফ্রি বিচারিক কার্যক্রম শুরু একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। বিচার বিভাগকে যুগোপযোগী, জনগণের হয়রানি কমানোসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং বিচার বিভাগকে প্রভাবমুক্ত করতে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের রোডম্যাপ ঘোষণা একটি নজিরবিহীন উদ্যোগ। এই রোডম্যাপের আলোকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন অগ্রগতি আইনজীবী সমাজসহ জনগণের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব তত্ত্বাবধান ও উদ্ভাবনে ওই বেঞ্চের যাবতীয় কাগজপত্র অনলাইনে জমা দেওয়ার প্ল্যাটফর্ম ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। চলতি বছর পর্যায়ক্রমে সুপ্রিম কোর্টের অন্য বেঞ্চগুলোতেও কাগজমুক্ত কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে প্রধান বিচারপতির। দীর্ঘ মেয়াদে দেশের নিম্ন আদালতগুলোতেও সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম এ তথ্যগুলো জানিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ গত ১১ আগস্ট শপথ গ্রহণ করেন। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে তিনি বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঘোষিত ওই রোডম্যাপে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের অর্থপূর্ণ সংস্কার নিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন কাউন্সিল গঠন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত রোডম্যাপের আলোকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ও অন্যান্য পরিকল্পনাগুলোও বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বিশেষ করে, ই-জুডিশিয়ারি বাস্তবায়নে প্রধান বিচারপতি বদ্ধপরিকর। দেশের উচ্চ আদালত ও জেলা আদালতগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে ই-জুডিশিয়ারির আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।