স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভোটারের সমর্থনের তথ্য যুক্ত করার বিধান নিয়ে রিট তালিকা থেকে বাদ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করতে হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের এই বিধানের বৈধতা নিয়ে করা রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
১৯৭২ সালের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২ (৩ক)(ক) বিধানের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রায়হান কাওসার আবেদনকারী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন। আজ সকালে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে আদালতের সম্পূরক কার্যতালিকায় রিটটি এক নম্বর ক্রমিকে আসে। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ইউসুফ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, দুই দিন আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের একটি বিধান (সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার তিন বছর পর সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিধান) নিয়ে একই বেঞ্চ রায় দেন। একই আইনের অন্য একটি বিধান নিয়ে করা রিটটি শুনবেন না মর্মে জানিয়ে আদালত রিটটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী ইউসুফ আলী জানিয়েছেন, এখতিয়ারসম্পন্ন হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে শিগগিরই রিটটি উপস্থাপন করা হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) ১২(৩ক)(ক) বিধান অনুযায়ী, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন-সংবলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতিপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে ওই তালিকা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
রিট দায়ের করার পর গতকাল ইউসুফ আলী প্রথম আলোকে বলেছিলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে ভোটারের গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। ভোটার কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন বা দেবেন না—এটি একান্তই তাঁর চিন্তা ও মত প্রকাশের অধিকার। সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ এই নিশ্চয়তা দিয়েছে। আরপিও–এর ১২ (৩ক)(ক) বিধানের কারণে ভোটারের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কারণ, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা দাখিল করতে হচ্ছে। বিধানটি সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩৯ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়—এসব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।