ডুবে যাওয়া জাহাজের নাবিক–মালিকের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে মেঘনায় এক জাহাজের ধাক্কায় আরেকটি জাহাজ ডোবার ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে মামলাটি হয়েছে ডুবে যাওয়া জাহাজ ‘এমভি রোকনুর–১’–এর নাবিক ও মালিককে আসামি করে। গত বুধবার লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানায় মামলাটি করা হলেও আজ শনিবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
ধাক্কা দেওয়া জাহাজ ‘এমভি প্রগতি গ্রিন লাইন–১’–এর মাস্টার নিজাম উদ্দিন সরদার মামলাটি করেন। মামলায় এমভি রোকনুর–১–এর মাস্টার জাকির, ড্রাইভার রহিম ও মালিক রোকনুর নেভিগেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হককে আসামি করা হয়েছে।
ডুবে যাওয়া জাহাজটিতে প্রিমিয়ার সিমেন্টের দুই হাজার টন সিমেন্ট ক্লিংকার ছিল। প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও আমিরুল হক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এমভি প্রগতি গ্রিন লাইন–১ নদীতে নোঙর করে রাখা ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে এমভি রোকনুর–১ এসে তাদের জাহাজের সামনের দিকে আঘাত করে বিপদের সৃষ্টি করে। এতে জাহাজের সরঞ্জামাদি নষ্ট হয় এবং পানি প্রবেশ করে জাহাজের সিমেন্টের কাঁচামাল নষ্ট হয়। সব মিলিয়ে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়। মালিকের প্ররোচনায় রোকনুর–১–এর নাবিকেরা তাঁদের মারধর করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
এমভি গ্রিন লাইন–১–এর মাস্টার নিজাম উদ্দিন সরদারের মুঠোফোনে আজ যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের জাহাজ বরিশালের অ্যাঙর সিমেন্টের (অলিম্পিক সিমেন্ট) ক্লিংকার খালাস করছে। জাহাজের ক্ষতি হলে কীভাবে সেখানে নেওয়া হলো এবং কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার কোনো যৌথ জরিপ হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেন। পরে আবার যোগাযোগ করা হলে ফোন ধরেননি।
তবে দুর্ঘটনার পর ডুবে যাওয়া জাহাজ এমভি রোকনুর–১–এর মাস্টার জাকির হোসেন মিয়া প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ঘন কুয়াশার কারণে হাতিয়ার লোয়ার মেঘনা নদীতে তাঁরা নোঙর করেছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে এমভি প্রগতি গ্রিন লাইন–১ এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোকনুর–১ জাহাজের পেছনের হ্যাচে (পণ্য রাখার খোল) ধাক্কা মারে। ধাক্কায় হ্যাচ ফেটে পানি ঢুকে জাহাজটি ডুবে যায়। এ সময় যে জাহাজটি ধাক্কা মেরেছে, তাঁরা সেটিতে উঠে প্রাণে রক্ষা পান বলেও জানান।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘তারা এজাহার দায়ের করেছে। আমরা মামলা নিয়েছি। নৌ পুলিশ মামলার তদন্ত করছে।’