রাস্তায় কাতরাচ্ছিলেন বৃদ্ধ, ইউএনওর সহায়তায় হাসপাতালে

অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন বৃদ্ধ শাহ আলম। উদ্ধারের পর হাসপাতালে ঠাঁই হয় তাঁর। গতকাল বিকেলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেপ্রথম আলো

অসুস্থতার কারণে রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছিলেন বৃদ্ধ শাহ আলম। খবর পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। পরে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কয়েকজন তরুণের সহযোগিতায় ভর্তি করানো হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই বৃদ্ধ।

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকার ছয় দিন পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই বৃদ্ধের খোঁজ পেয়ে হাসপাতালে আসেন পরিবারের সদস্যরা। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার ইছাখালি গুচ্ছগ্রাম এলাকায় তাঁর বাড়ি। ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী রয়েছেন তাঁর। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের লিচুবাগান এলাকায় সড়কের পাশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই বৃদ্ধকে।

গতকাল বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, পুরুষ ওয়ার্ডের বারান্দার মেঝেতে বসে আছেন বৃদ্ধ শাহ আলম। অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিনি। তবে কথা বলার শক্তি নেই তাঁর।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তৌহিদুল আলম বলেন, কয়েকজন তরুণ অসুস্থ অবস্থায় বৃদ্ধ লোকটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ভর্তি করানোর পর ওই রোগীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক থাকার কোনো লোক ছিল না। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার কোনোটার কমতি হয়নি। ওই বৃদ্ধ বেওয়ারিশ হিসেবে ভর্তি হয়েছিলেন। তাঁর পরিবার খোঁজ পেয়ে হাসপাতালে আসে। রোগী অনেকটা সুস্থ। তিনি নানা বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। রোগীকল্যাণ সমিতি থেকে তাঁর চিকিৎসার জন্য ব্যয় করা হয়।

এ বিষয়ে কথা হয় পৌরসভার স্থানীয় কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন শাহর সঙ্গে। তিনি বলেন, ওই বৃদ্ধ একাধিক বিয়ে করেছেন। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ার কারণে তিনি নিজে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে রাস্তার পাশে পড়ে ছিলেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদুল হাসান স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সহযোগিতায় অসুস্থ অবস্থায় বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করান।

নুরের আলো যুব একতা সংঘ নামের ওই সংগঠনের সভাপতি নাজমুল আমিন তারেক বলেন, ‘ইউএনওর কাছে খবর পেয়ে আমিসহ সংগঠনের কয়েকজন সদস্য ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। বৃদ্ধ লোকটির জন্য ইউএনওর দেওয়া টাকা দিয়ে বাজার থেকে নতুন কাপড় কিনে আনা হয়। চিকিৎসকের পরামর্শমতো প্রয়োজনীয় ওষুধ, পানি ও খাবার কিনে খাওয়ানোর পর আমরা হাসপাতাল থেকে চলে আসি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, লোকটির রাস্তায় কাতরানোর খবর পেয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। বৃদ্ধ লোকটির পরিবারের খোঁজ পাওয়া গেছে। তারা হাসপাতালে এসেছে।