এখন আর আগের মতো পড়া মুখস্থ করতে হয় না

চট্টগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের স্কুল উৎসবে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল
ছবি: প্রথম আলো

অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, এখন আর আগের মতো মুখস্থ করতে হয় না। স্কুলে বসেই লেখাপড়া করা যায়, সবাই মিলে মজা করা যায়। শিক্ষার্থীরা নতুন শিক্ষাক্রমে খুশি।

আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের স্কুল উৎসবে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নগরের টাইগারপাস রেলওয়ে কলোনি মাঠে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন হয়। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব আবদুল আলিম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

পরীক্ষাপদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, ‘এখন যদি শুনি কারও বাচ্চা জিপিএ-৫ পেয়েছে, তাহলে মনে হয় বাচ্চাটার কত কষ্ট। সে স্কুলে গিয়ে পড়াশোনা করে, কোচিং করে, প্রাইভেট পড়ে, গাইড বই মুখস্থ করে। পরে পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দেয়, মাঝেমধ্যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, মা-বাবা সে প্রশ্ন ডাউনলোড করেন, বাচ্চারা আবার সেটি মুখস্থ করে। পরীক্ষা খারাপ হলে মা-বাবা বকা দেন। সব মিলিয়ে বাচ্চাটার জীবনে কত কষ্ট।’

জাফর ইকবাল বলেন, বাচ্চারা আনন্দ করবে, এত কষ্ট কেন করবে? এসব চিন্তা করে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন আর ক্লাস সিক্সের পর পরীক্ষা নেই। বাচ্চারা শুধু লেখাপড়া করবে, গবেষণা করবে, নিজেরা বিভিন্ন রোবট বানাবে, প্রজেক্ট বানাবে।

পৃথিবীতে বড় বড় কাজ বেশি টাকা দিয়ে হয় না, উল্লেখ করে জাফর ইকবাল বলেন, যদি বেশি টাকা দিয়ে কাজ হতো, তাহলে পৃথিবীর বড় বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও শিল্পীরা হতেন মধ্যপ্রাচ্যের। কারণ, তাদের টাকা বেশি। যেকোনো কাজের জন্য প্রয়োজন আন্তরিকতা ও ভালোবাসা। স্বপ্নবাগিচা মানুষের জন্য সে ভালোবাসা বুকে ধারণ করতে পেরেছে। তারা অত্যন্ত সুন্দর করে একটি সংগঠন গড়ে তুলতে পেরেছে।

স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল আলম বলেন, দরিদ্র এবং শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত শিশুদের ধূসর ও মলিন জীবনে উৎসবের আমেজ নিয়ে আসতেই স্কুল উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। স্বপ্নবাগিচা বিদ্যানিকেতনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৯ সালে। প্রতিবছর ৩০ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে ভর্তি নেওয়া হয়। শুরুতে বিদ্যালয়টি দুজন শিক্ষক স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫০ জন আর বেতনভুক্ত শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন।