চা–বাগানের স্কুল ভবন তৈরিতে বাধা, দেয়াল গুঁড়িয়ে দিল দুর্বৃত্তরা

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে চা বাগানের নির্মাণাধীন স্কুলভবনের দেয়াল গুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ দুপুরে তোলাছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে চা–বাগানের নির্মাণাধীন স্কুল ভবনের দেয়াল গুঁড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চাঁদপুর-বেলগাঁও চা–বাগানে এ ঘটনা ঘটে। ভাঙচুরের ঘটনায় চা–বাগানের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক কাজী সোহেল রানা ২৯ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

চা–বাগান কর্তৃপক্ষ জানায়, সাড়ে তিন হাজার একর জায়গায় গড়ে তোলা চা–বাগানে ৭০০ চা–শ্রমিকসহ প্রায় দেড় হাজার লোকের বসবাস। আর এসব শ্রমিক ও আশপাশের এলাকার শিশুদের পড়াশোনার জন্য চা–বাগান কর্তৃপক্ষ ২০০৯ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে। এ বিদ্যালয়ের প্রাক্‌–প্রাথমিক শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করে। তবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং পুরোনো টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অসুবিধা হওয়ায় ২১ সেপ্টেম্বর একটি সেমি পাকা টিনশেড ভবনের কাজ শুরু করে বাগান কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে ৯-১০ জন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে বলে। ওই দিন বিকেলে ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী লোক নির্মাণাধীন ভবনের দেয়াল গুঁড়িয়ে দিয়ে চলে যায়।

আজ বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ভেঙে দেওয়া দেয়ালের ধ্বংসাবশেষ দেখা গেলেও কোনো ইট, বালু কিংবা নির্মাণ সরঞ্জাম চোখে পড়েনি। স্কুল বন্ধ থাকায় সেখানে কেউ নেই। মাঠেও কাউকে খেলাধুলা করতে দেখা যায়নি।

চা–বাগানের স্থানীয় শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ বলেন, ‘আমরা চা–বাগানে চাকরি করি। এ স্কুলে আমাদের পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করে। কিন্তু ভাঙচুরের পর আমরা শঙ্কিত।’

স্থানীয় পুকুরিয়া ইউপির সদস্য মো. ফারুক বলেন, ‘ঘটনার দিন ছাত্র–জনতা খেলার মাঠে ভবন করায় উত্তেজিত হয়ে পড়লে চা–বাগান কর্তৃপক্ষ আমাকে ডাকে এবং আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমরা কেউ চা–বাগানের স্কুল ভবনের দেয়াল ভাঙার সঙ্গে জড়িত নই।’

এ ব্যাপারে চা–বাগানের ব্যবস্থাপক আবুল বাশার বলেন, চা–বাগান, স্কুল ও খেলার মাঠ চা–বাগানের মালিকানার। তারপরও খেলার মাঠের ক্ষতি না হয়, এমনভাবে মাঠের এক পাশে একটি ভবন করা হচ্ছিল স্কুলের জন্য। মাঠটি অনেক বড় হলেও লোকজন অসদুদ্দেশ্যে নির্মাণাধীন স্কুল ভবনের দেয়াল গুঁড়িয়ে দেয় এবং কাজে বাধা দেয়। এতে করে চা–বাগানের দরিদ্র ও নিরীহ শ্রমিকদের ছেলেমেয়েরা ভয়ে আর বিদ্যালয়ে যেতে চাইছে না। এমনকি চা–বাগানে বসবাসরত চা-শ্রমিক, কর্মচারী-কর্মকর্তাসহ প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, চা–বাগান কর্তৃপক্ষ থানায় একটি জিডি করেছে, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।