চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার মুস্তাকিমের জন্য আইনজীবী নিয়োগ দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চট্টগ্রামে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার মো. মুস্তাকিমকে আইনি সহায়তা দেবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ জন্য প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ করেছে সংস্থাটি। আজ শনিবার কমিশনের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি ও সরকারিভাবে ভর্তুকি ফি কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে কিডনি রোগীর স্বজনদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে গত মঙ্গলবার মুস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। একমাত্র ছেলে কারাগারে থাকায় এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন মুস্তাকিমের মা নাসরিন আক্তার। মুস্তাকিমের টিউশনির টাকাতেই চলত তাঁর ডায়ালাইসিসের খরচ। নাসরিন আক্তারের অসহায়ত্ব নিয়ে গতকাল শুক্রবার প্রথম আলো অনলাইনে ‘ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো একমাত্র ছেলেটি কারাগারে, দিশাহারা মা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ কমিশন মুস্তাকিমের জন্য আইনজীবী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়।
আজ কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রথম আলো পত্রিকায় “ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো একমাত্র ছেলেটি কারাগারে, দিশাহারা মা” শীর্ষক সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয় যে ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছেলে মুস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে মামলা করে। একমাত্র ছেলে কারাগারে থাকায় এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছেন মা কিডনি রোগী নাসরিন আক্তার। এ ঘটনায় কমিশন ভুক্তভোগী মুস্তাকিমকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য প্যানেল আইনজীবী নিয়োগ করেছে।’
কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ডায়ালাইসিস–সেবা কম খরচে কীভাবে দেওয়া যায়, তা পর্যালোচনা করা জরুরি। একইভাবে এ কারণে রাস্তা অবরোধ, রোগীদের হাসপাতালের সেবা গ্রহণ ও জনসাধারণের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি—কোনোটিই কাম্য নয়। ভুক্তভোগীরা যখন এ বিষয়ে প্রতিবাদ শুরু করেছিল, তখনই বিষয়টির প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া, আলোচনা ও ক্ষোভ প্রশমনের মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পরিহারের প্রচেষ্টা নেওয়া সমীচীন ছিল।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার জনসাধারণের বৃহত্তর কল্যাণে বিবিধ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ অবস্থায় সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে মানুষের চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য উক্ত ডায়ালাইসিসের খরচ বৃদ্ধি না করে কীভাবে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা যায়, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে ১১ জানুয়ারি চিঠি দেওয়া হয়েছে।