ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আটকে আছে শত শত যানবাহন
সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়েছে। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় মহাসড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
রাজধানীর শনির আখড়ায় বুধবার দিনভর ও রাতে আন্দোলনকারী-পুলিশের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে। টায়ার ও কাঠ জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আগুন দেওয়া হয়। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজায়ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে সেখানে পুলিশ ও আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছিলেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় শত শত মালবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস দাঁড়িয়ে আছে। শনির আখড়ার সংঘর্ষের কারণে এই মহাসড়ক দিয়ে কোনো গাড়ি রাজধানীতে ঢুকতে পারছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই যানবাহনগুলোর যাত্রী ও চালকেরা।
নোয়াখালী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী হিমাচল পরিবহনের যাত্রী মো. রাব্বি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বুধবার রাত আটটার দিকে এই গাড়িতে করে রাজধানীর উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু দুই ঘণ্টা যাবৎ সাইনবোর্ডে আটকে আছে তাঁর বাস।
চট্টগ্রাম থেকে বিকেল ৫টার দিকে রওনা দিয়ে রাত ১০টার দিকে সাইনবোর্ড এলাকায় আসেন আর কে এন্টারপ্রাইজের কাভার্ড ভ্যানের চালক রুবেল মিয়া। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তাঁর গাড়িটি মতিঝিল যাবে। দুই ঘণ্টা ধরে যানজটে আটকে আছেন। গাড়িতে মালামাল রয়েছে। তাই রাস্তায় যত ঝামেলা থাকুক না কেন, ঝুঁকি নিয়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে।
আনোয়ার সিমেন্ট কোম্পানির গাড়ির চালক নাজির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শনির আখড়ায় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনায় কোনো গাড়ি সামনের দিকে যেতে পারছে না। কখন পুরান ঢাকার কদমতলীতে পৌঁছাবেন, তা-ও জানেন না। ভাঙচুর ও আগুনের ঘটনায় আতঙ্ক তো আছেই।
সকাল থেকে সাইনবোর্ড এলাকায় পেয়ারা বিক্রি করছেন কামরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা সাইনবোর্ড এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শনির আখড়ার দিকে যান। সাইনবোর্ডে সকালে ও রাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। যানজট ছাড়া এখানে কোনো ঝামেলা নেই। মহাসড়কের নিরাপত্তায় টহল পুলিশ রয়েছে।
সাইনবোর্ড এলাকায় দায়িত্বরত ফতুল্লা মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সামিউল প্রথম আলোকে বলেন, শনির আখড়ার সংঘর্ষের কারণে যানবাহন সামনের দিকে যেতে পারছে না। এ কারণে যানবাহনের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে। তবে মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি ভালো আছে।