চট্টগ্রাম-১০ আসনে উপনির্বাচন: কেন্দ্রে শুধু নৌকার এজেন্ট, অন্যদের দেখা নেই
চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজারের জামাআতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে বুথ রয়েছে ১০টি। এখানে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনের ভোট নেওয়া হচ্ছে। প্রার্থী আছেন ৬ জন। এই হিসাবে কেন্দ্রটিতে ৬০ পোলিং এজেন্ট থাকার কথা। কিন্তু দেখা গেছে ১০ জনকে। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিনের এজেন্ট। অন্য প্রার্থীদের কারও কোনো এজেন্ট দেখা যায়নি।
অবশ্য কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাহেদ আহমদ তাপাদার বলেন, লাঙ্গল প্রতীকের দুজন পোলিং এজেন্ট আবেদন করেছিলেন। তাঁদের একজন এসেছিলেন, অন্যজন আসেননি। আর অন্য পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে শুধু নৌকা প্রতীকের এজেন্ট আছেন। আর কারও কোনো এজেন্ট নেই। তবে কেন নেই, তা জানা নেই।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা লাঙ্গল প্রতীকের একজন পোলিং এজেন্ট থাকার কথা বললেও তাঁকে দেখা যায়নি।
শুধু জামাআতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ভোটকেন্দ্রে নয়, অন্য কেন্দ্রগুলোতেও একই ধরনের চিত্র পাওয়া গেছে। ভোটকেন্দ্রগুলোর ভেতরে যেমন নৌকা প্রতীকের এজেন্ট আছেন, তেমনি বাইরেও নৌকা ব্যাচধারীদের দাপট।
আজ রোববার সকাল ৮ট থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অন্তত ১৫টি কেন্দ্র ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
উপনির্বাচনে মোট ১৫৬টি কেন্দ্রের ১ হাজার ২৫১টি কক্ষে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৯৫টি সাধারণ, অন্য ৫৯টি কেন্দ্র ‘গুরুত্বপূর্ণ’। গুরুত্বপূর্ণ এসব কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা রয়েছে। ভোটের দিন চার প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের চারটি টহল দল ও পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
নগরের লালখান বাজারের শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে তিনটি কেন্দ্রে ২১টি বুথ রয়েছে৷ কোনোটিতেই নৌকা ছাড়া আর কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি।
সকাল সাড়ে ১০টায় এই কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী দীপক কুমার পালিত। কেন্দ্রে এজেন্ট না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, এজেন্ট তো থাকার কথা। তাঁদের নির্বাচনী কমিটি যেখানে প্রয়োজন মনে করেছে, সেখানে এজেন্ট দিয়েছে। নির্বাচনী কৌশলের অংশ হিসেবে সব কেন্দ্রে এজেন্ট দেননি।
এই উপনির্বাচনে মোট প্রার্থী ছয়জন। তবে ধারণা করা হচ্ছে, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী সামশুল আলমের মধ্যে। নির্বাচনের অপর প্রার্থীরা হলেন তৃণমূল বিএনপির দীপক কুমার পালিত (সোনালি আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রশীদ মিয়া (ছড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আরমান আলী (বেলুন) ও মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া (রকেট)।
নির্বাচনের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামশুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তো সব কেন্দ্রে এজেন্ট দিয়েছি। আপনারা কেন পাচ্ছেন না, তা তো বুঝতে পারছি না।’
নগরের রেলওয়ে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও পাহাড়তলী রেলওয়ে কলোনি প্রাথমিক বিদ্যালয় পাশাপাশি দুটি কেন্দ্র। এই দুটি কেন্দ্রে ৮টি করে ১৬টি বুথ। কিন্তু একটিতেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর এজেন্ট দেখা যায়নি। দুটি কেন্দ্রের বাইরেও নৌকা ব্যাচধারীদের অবস্থান ছিল। পুরুষ কর্মীদের পাশাপাশি নারী কর্মীদেরও উপস্থিতি ছিল।