দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে আলাদা তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিগুলোর প্রতিবেদন পাওয়া গেলে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত হবে। তদন্ত কমিটির অনুসন্ধান ও সুপারিশের ভিত্তিতে পরিকল্পিত উপায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ সম্ভব হবে।
বঙ্গবাজারে আগুনের ঘটনা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন এনামুর রহমান। আগুনের ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে এনামুর রহমান বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকির কথা জানিয়ে ১০ বার নোটিশ দেওয়া হলেও ব্যবসায়ী সমিতি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স মার্কেটটি দীর্ঘদিনের পুরোনো টিন-কাঠ দিয়ে তৈরি বিধায়, এটির জরাজীর্ণ অবস্থার কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী, ঝুঁকিপূর্ণ এবং যেকোনো সময় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে জানিয়ে ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে বিভিন্ন সময় মার্কেট সমিতিকে মোট ছয় বার চিঠি দেওয়া হয়েছে ও মার্কেট খালি করার অনুরোধ করা হয়েছিল।
কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা দোকান খালি না করে করপোরেশনকে বিবাদী করে মামলা করেন। এ মামলাগুলোতে আদালত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পদক্ষেপে স্থগিতাদেশ দিলে মার্কেটটি ভাঙা বা উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ২০১৯ সালের এপ্রিলে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে মার্কেটে সতর্কতামূলক ব্যানার ঝুলিয়ে সতর্ক করে। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে অগ্নিনিরাপত্তা সম্পর্কে বারবার নোটিশ দিয়ে তাদের সঙ্গে বৈঠক করে ঝুঁকির বিষয়টি জানানো হলেও তারা এই বিষয়টি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বঙ্গবাজার অগ্নিকাণ্ডের পর দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাজ ও সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন এনামুর রহমান। তিনি বলেন, সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান এ সময়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে।
এনামুর রহমান বলেন, উৎসুক জনতার ভিড়, পানির অপর্যাপ্ততা, অধিক বাতাস, তৈরি পোশাক, মালামাল গাদাগাদি করে স্টোর করা, কাপড়ের গোডাউন, পলিথিন সামগ্রী, টিন ও কাঠের সহজ দাহ্য দ্বারা তৈরি তিনতলা মার্কেট, কাঠের পাটাতন ইত্যাদি কারণে আগুন নির্বাপণে সময় বেশি লাগলেও সর্বাত্মক আন্তরিক চেষ্টায় অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।