কক্সবাজারে পৃথকভাবে ‘শহীদি মার্চ’ পালন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

কক্সবাজার শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা পৃথক ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করে। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় । আজ বিকেলেছবি-প্রথম আলো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্র ঘোষিত ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি কক্সবাজারে পালিত হয়েছে পৃথকভাবে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দুই পক্ষ পৃথক সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি পালন করে। একপক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দলীয় স্বার্থ রক্ষাসহ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তোলে।

দেখা গেছে, বেলা দুইটার দিকে শহরের পাবলিক হল থেকে শহীদি মার্চের মিছিল বের করে প্রধান সড়ক ঘুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছে ব্যানার টাঙিয়ে সমাবেশ শুরু করে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষ। আরেকটি পক্ষ শহরের কলাতলী থেকে মিছিলসহকারে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পৌঁছে পৃথক ব্যানার টাঙিয়ে সমাবেশ শুরু করে। বিকেল চারটার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা, হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। ৪০ গজ দূরত্বে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলে পৃথক সমাবেশ।

একটি পক্ষে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়, শিক্ষার্থী জিনিয়া আক্তার, ওয়াহিদুল ইসলাম, রিয়াদ মনিসহ কয়েকজনকে। তাঁরা কক্সবাজার সরকারি কলেজ ও কক্সবাজার সিটি কলেজের শিক্ষার্থী। অন্য পক্ষে নেতৃত্ব দেন কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আজিমা আক্তার, মোহাম্মদ সাগরসহ কয়েকজন।

আজিমা আক্তার বলেন, পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরাই প্রথম কক্সবাজারে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সব বাধা উপেক্ষা করে তাঁরাই সবকিছু সামাল দিয়েছেন। হামলার শিকার হয়েছেন। কিন্তু এখন সমন্বয়ক কমিটি বানিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে আরেকটি পক্ষ।

পাল্টা অভিযোগ তুলে অপর পক্ষের জিনিয়া আক্তার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নাম দিয়ে একটি গ্রুপ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাম ভাঙিয়ে অনেকেই অর্থ লেনদেন করছেন। ছাত্রসমাজের নাম ভাঙিয়ে কাউকে মিশন বাস্তবায়নের সুযোগ দেব না।’

জানা গেছে, কক্সবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় ১৬ জুলাই থেকে। ওই দিন শহরের লিংকরোড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ছাত্র জমায়েত ও মিছিল বের করেন কক্সবাজার পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর কক্সবাজার সরকারি কলেজ, কক্সবাজার সিটি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ওই দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নামে বহিরাগত কিছু লোকজন শহরের মডেল থানা, ট্রাফিক ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়, কয়েকটি হোটেল, বাসভবন ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালায়। এর পর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।