বন্ধ্যাত্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই সম্ভব

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় সর্বাধুনিক ওষুধের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এফএসএসবি)। ঢাকা, ০৪ এপ্রিলছবি: সংগৃহীত

বন্ধ্যাত্বের সর্বাধুনিক চিকিৎসা এখন বাংলাদেশেই করা সম্ভব। সম্প্রতি রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেশের প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এই কথা বলেছেন।

বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজিতে (আইভিএফ) সর্বাধুনিক ওষুধের (জিএনআরএইচ অ্যান্টাগনিস্ট-সেট্রোরেলিক্স) ভূমিকা নিয়ে এ বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি সোসাইটি অব বাংলাদেশের (এফএসএসবি) উদ্যোগে আয়োজিত এ সভার সার্বিক সহযোগিতায় ছিল এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের সেট্রোলিক্স-আইভিএফ চিকিৎসায় ইউএসএফডিএ অনুমোদিত বাংলাদেশের প্রথম জিএনআরএইচ অ্যান্টাগনিস্ট-সেট্রোরেলিক্স।

সভায় মূল বক্তা ছিলেন তানজিম সাবিনা চৌধুরী। তিনি প্রচলিত ও অপেক্ষাকৃত পুরোনো আইভিএফ চিকিৎসার সঙ্গে আধুনিক জিএনআরএইচ অ্যান্টাগনিস্ট (সেট্রোরেলিক্স) প্রটোকলের তুলনামূলক আলোচনা করেন এবং এর সাফল্য তুলে ধরেন। এ ছাড়া তিনি উপস্থিত কনিষ্ঠ (জুনিয়র) চিকিৎসকদের সঙ্গে জিএনআরএইচ অ্যান্টাগনিস্টের (সেট্রোরেলিক্স) ব্যবহারবিধি সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফএসএসবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও দেশবরেণ্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক টি এ চৌধুরী বলেন, এত দিন পর্যন্ত সেট্রোরেলিক্স ইনজেকশন দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হতো। পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় প্রায়ই মাঝপথে রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যেত। সরবরাহে বিভিন্ন সমস্যার কারণে ওষুধের গুণগত মান নিয়েও চিকিৎসকেরা সংশয়ে থাকতেন। আমদানি করা ওষুধের পরিবর্তে দেশেই উৎপাদিত বিশ্বমানের ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে রোগীরা উপকৃত হবেন বলে জানান তিনি।

সভায় উপস্থিত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, আইভিএফ বা ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিকে বন্ধ্যাত্বের আধুনিক চিকিৎসায় বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক পরিচিত ধরন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কয়েক বছর আগেও এই প্রক্রিয়ায় সন্তানধারণ করতে চাইলে যেতে হতো দেশের বাইরে। আইভিএফ প্রযুক্তির অধিকাংশ ওষুধও উন্নত দেশ থেকে আমদানি করতে হতো। সর্বাধুনিক সেট্রোরেলিক্সসহ এই প্রযুক্তির অনেক ওষুধ এখন দেশেই উৎপাদিত হওয়ায় চিকিৎসার ব্যয় অনেকাংশেই কমে আসবে।

আলোচনা সভায় এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের অতিরিক্ত পরিচালক বিনয় দাস বলেন, সেট্রোলিক্স কঠোর মান নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তৈরি করা হয়। কোল্ড চেইন ডিসট্রিবিউশনের মাধ্যমে এর গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে রোগীদের হাতে পৌঁছে দিতে এসকেএফ অঙ্গীকারবদ্ধ। ভবিষ্যতেও এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড দেশের মানুষের সেবায় সাশ্রয়ী মূল্যে আধুনিক সব ওষুধ প্রস্তুত করতে ভূমিকা রাখবে।

এফএসএসবির সভাপতি অধ্যাপক পারভিন ফাতিমার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের সংগঠন অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সভাপতি অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান।

আরও পড়ুন

ফারজানা দীবার উপস্থাপনায় আলোচনায় অন্যদের মধ্যে এফএসএসবির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক রাশিদা বেগম, ওজিএসবির সহসভাপতি ও এফএসএসবির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক সালেহা বেগম চৌধুরী, এন্টারটেইনমেন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক জেসমিন বানু, সায়েন্টিফিক সেক্রেটারি অধ্যাপক মারুফ সিদ্দিকী এবং জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক মরিয়ম ফারুকি আইভিএফ চিকিৎসায় নতুন পদ্ধতিতে তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং সাফল্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

প্রথমবারের মতো দেশের একমাত্র ইউরোপিয়ান জিএমপি অনুমোদিত আইসোলেটর ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্যাসিলিটি থেকে আধুনিক আইভিএফ চিকিৎসায় অপরিহার্য ইউএস এফডিএ অনুমোদিত জিএনআরএইচ অ্যান্টাগনিস্ট-সেট্রোরেলিক্স ইনজেকশন-সেট্রোলিক্স নিয়ে আসাতে এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালকে ধন্যবাদ জানান অধ্যাপক নুসরাত মাহমুদ।

আরও পড়ুন