জাহিদ মালেক, জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক ও মির্জা আজমের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

(বাঁ থেকে) সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ (পলক) ও সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমফাইল ছবি: প্রথম আলো

ক্ষমতার অপব্যবহার করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ (পলক), সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, মামলায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ও তাঁর ছেলে রাহাত মালেকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ ও তাঁর স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ। আর সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তাঁর স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলায় ৭২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জাহিদ মালেক, জুনাইদ আহ্‌মেদ ও মির্জা আজমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করা হয়েছিল। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। দেশ-বিদেশে তাঁদের আরও সম্পদ রয়েছে কি না, মামলার তদন্তে তা বেরিয়ে আসবে।

সংশ্লিষ্ট দুদক সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক নিজ নামে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলে ৩৪টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৪৩ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯৭ টাকা জমা ও ১১৫ কোটি ৮৫ লাখ ৬ হাজার ৪৬৫ টাকা উত্তোলন করেছেন। তিনি নিজের অবৈধ অর্জিত ১১ কোটি ৪৯ লাখ ৮৪ হাজার ১৬১ টাকা তাঁর পুত্র রাহাত মালেকের নামে দেখিয়েছেন। এ ছাড়া জাহিদ মালেকের স্ত্রী শাবানা মালেক, মেয়ে সাদিয়া মালেক, সিনথিয়া মালেক ও পুত্রবধূ সাকিবা মালেকের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়েছে এবং ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এই টাকা লেনদেন হয়েছে।

মামলায় মির্জা আজমের ৬০টি ব্যাংক হিসাবে ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ হাজার ২৩২ টাকা জমা হয়েছে এবং ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ টাকা তিনি তুলে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেনীর সাবেক সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ভোলার সাবেক সংসদ সদস্য নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহির, নোয়াখালীর সাবেক সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম ও লক্ষীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।