১১৭ নাগরিকের বিবৃতি
দক্ষিণ এশিয়ায় ফ্যাসিস্ট ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের আহ্বান
ফ্যাসিস্ট ও সাম্প্রদায়িক তৎপরতা, শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হানি প্রতিরোধের লক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়াব্যাপী ঐক্যবদ্ধ লড়াই ও জনমৈত্রী গড়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের ১১৭ জন নাগরিক। তাঁরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বসবাসরত শান্তিকামী মানুষ চলমান সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের আস্ফালন এবং ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা রুখে দিতে জনমৈত্রী বিস্তৃত করবে।
আজ মঙ্গলবার ১১৭ নাগরিকের পক্ষে গণমাধ্যমে বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন অ্যাকটিভিস্ট মারজিয়া প্রভা। সম্প্রতি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জনগণের ওপর সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী আক্রমণ বৃদ্ধির নানা খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এই বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনা তার একটি। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, ‘আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে এবং তাদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে কোনো দেশেই সমস্যার সমাধান করা যায় না। শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত দাবিগুলো তাঁদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করাই কাম্য।’ যাদবপুরের শিক্ষার্থীরা যেভাবে কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কথা বলেছেন, তা অত্যন্ত সাহসী ও প্রশংসনীয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা তাদের এই মানবিক উদ্যোগের সঙ্গে পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দোলযাত্রার দিনে ভারতের বিভিন্ন স্থানে উগ্র দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক গোষ্ঠীস্বার্থের সুবিধার্থে সুপরিকল্পিত উসকানি দিয়ে ভারতীয় সংখ্যালঘু মুসলমান জনগোষ্ঠীর ওপর যে হয়রানি ও ধর্মীয় অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে তারও আমরা নিন্দা জানাই।’এতে বলায় হয়, কাশ্মীরসহ বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পক্ষে সোচ্চার অবস্থান নেওয়া সবার দায়িত্ব। এই প্রতিবাদ শুধু নিজেদের অধিকারের জন্য নয়, বরং সারা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য এবং সব দেশের নিপীড়িত মানুষ, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী ও শ্রমজীবী মানুষদের পাশে দাঁড়ানো সব মুক্তিকামী মানুষের কর্তব্য। বিবৃতিদাতারা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে বসবাসরত শান্তিকামী মানুষ চলমান সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের আস্ফালন এবং ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা রুখে দিতে জনমৈত্রী বিস্তৃত করবে।
এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, শিল্পী ও গবেষক অরূপ রাহী, লেখক পারভেজ আলম, আইনজীবী মানজুর আল মতিন, কবি তুহিন খান, শিক্ষক অলিউর সান, লেখক ও গবেষক সহুল আহমেদ, গবেষক মীর হুযাইফা আল মামদূহ, কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার তুহিন কান্তি দাশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি দিলীপ রায়, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু প্রমুখ।