রাঙামাটিতে গতকাল শুক্রবার সকালে ঘটে যাওয়া সহিংসতার ঘটনায় একজনের মৃত্যুর পর শহরজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে শুক্রবার প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা আজ শনিবারও বলবৎ ছিল। বন্ধ ছিল শহরের দোকানপাট। বসেনি সাপ্তাহিক হাট। জরুরি প্রয়োজনে দু-একজন ঘর থেকে বের হলেও রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। শহরের বনরূপা, হ্যাপির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে এখনো সহিংসতার ক্ষত দৃশ্যমান। বনরূপা এলাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংক ও রোগনির্ণয়কেন্দ্রের সামনের ফুটপাতে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে ছিল ভাঙা কাচ।
রাঙামাটি শহরের চারটি স্থানে প্রতি শনিবার পাহাড়িদের জমজমাট সাপ্তাহিক হাট বসে। আজ কোথাও হাট বসেনি। দূরদূরান্ত থেকে কোনো ক্রেতা-বিক্রেতাও আসেননি। শহরের সবচেয়ে বড় বাজার বনরূপা বাজারও ছিল ফাঁকা। গতকালের সংঘর্ষের সময় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা সবজি আর ফলমূল রাস্তায় পড়েছিল সেভাবেই। শহরে কিছু অটোরিকশা চললেও যাত্রী তেমন ছিল না। রাস্তায় রাস্তায় টহল দিয়ে বেড়িয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও সদরে সহিংসতার জের ধরে গতকাল শুক্রবার রাঙামাটিতেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের বনরূপা, হ্যাপির মোড়, নিউমার্কেট, কালিন্দীপুর, বিজয় সরণিসহ বেশ কিছু এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি কার্যালয়, আঞ্চলিক পরিষদ, দুটি ক্লিনিক, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। অনীক কুমার চাকমা নামের এক কলেজছাত্র পিটিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হন দেড় শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে অর্ধশতাধিক আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে নিউমার্কেট, বনরূপা, বিজয় সরণি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুপাশে ধ্বংসস্তূপ ও পুড়ে যাওয়া অবকাঠামো তেমনই আছে। শহরের কল্যাণপুর ও বনরূপা এলাকা ছিল প্রায় জনশূন্য। অথচ ওই সব স্থানে আজ জমজমাট হাট বসার কথা ছিল। তবলছড়ি ও আসাবস্তীতেও বসেনি সাপ্তাহিক হাট।