ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেয় আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে। জলদস্যুরা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সময় জাহাজটির এক তরুণ নাবিক দ্রুত বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতার কাছে খুদে বার্তা পাঠান। এ বার্তায় লেখা ছিল, ‘এমভি আবদুল্লাহ। পাইরেটস অ্যাটাক অন সোমালিয়া, প্লিজ হেল্প আস। দে হ্যাভ গান। উই আর অ্যাটাকড।’
বার্তা পেয়ে উৎকণ্ঠা শুরু হয় মার্চেন্ট মেরিন কর্মকর্তাদের মধ্যে। তাঁরা দ্রুত যোগাযোগ শুরু করেন জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ হয়। এ সময় জানা যায়, নাবিকদের কেবিনে আটকে রাখা হয়েছে। জলদস্যুরা পুরো জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে জাহাজের নাবিক আসিফুর রহমান ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। এতে তিনি লেখেন, ‘সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে আমরা আক্রমণের শিকার। আমরা সবাই সুস্থ ও নিরাপদে আছি। আমাদের প্রার্থনায় রাখুন।’ এ পোস্টে জলদস্যুরা জাহাজে উঠছে, এমন একটি ভিডিও শেয়ার করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটায় জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিক উল্লাহ খান ফেসবুকে একটি পোস্টে দেন। এতে বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আমরা ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। দুশ্চিন্তা কোরো না।’
জাহাজের নাবিকদের সর্বশেষ অবস্থা জানতে কথা হয় কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি রাত নয়টায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘নাবিকদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। দস্যুরা নাবিকদের ওপর কোনো আঘাত করেনি। তারা জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। নাবিকেরা সবাই ভালো আছে। তবে এখনো জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় নানা প্রতিনিধিদের মাধ্যমে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
কবির গ্রুপের কর্মকর্তারা জানান, জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিয়ে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করতে দর-কষাকষি শুরু করতে পারে তারা। তবে এখন পর্যন্ত জলদস্যুরা কোনো যোগাযোগ করেনি।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কবির গ্রুপেরই সবচেয়ে বেশি সমুদ্রগামী জাহাজ রয়েছে। গ্রুপটির সহযোগী সংস্থা এস আর শিপিং লিমিটেড জাহাজটি পরিচালনা করছে। এর আগেও ২০১০ সালে গ্রুপটির জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’ ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। তিন মাসের মাথায় মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়িয়ে এনেছিল কবির গ্রুপ।