সংস্কারের গতিই ঠিক করে দেবে, নির্বাচন কত দ্রুত হবে: এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বুধবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৯)। বাকু, আজারবাইজান, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ছবি: এএফপি

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ভোটের মাধ্যমে দেশে একটি নতুন সরকার নির্বাচিত করার আগে নানা সংস্কার দরকার।

গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ কথা বলেন ড. ইউনূস। তিনি বর্তমানে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৯) অংশ নিতে আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অবস্থান করছেন। এই সম্মেলনের ফাঁকে এএফপিকে সাক্ষাৎকার দেন ক্ষুদ্রঋণের এই পথিকৃৎ।

আরও পড়ুন

শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, সংস্কারের গতিই ঠিক করে দেবে, নির্বাচন কত দ্রুত হবে।

তবে ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, তিনি দেশকে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের দিকে নিয়ে যাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা, ‘এটি একটি প্রতিশ্রুতি, যা আমরা দিয়েছি। আমরা প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্বাচন দেব এবং নির্বাচিত ব্যক্তিরা ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশ পরিচালনা করতে পারবেন।’

ড. ইউনূস আরও বলেন, সম্ভাব্য সাংবিধানিক সংস্কারের পাশাপাশি সরকার, জাতীয় সংসদ ও নির্বাচনী বিধিমালার কাঠামোর বিষয়ে দেশে দ্রুত ঐকমত্য দরকার।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। তাই আমাদের মেয়াদ যতটা সম্ভব সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।’

আরও পড়ুন

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়। এরপর অন্তর্বর্তী সরকারকে নেতৃত্ব নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ড. ইউনূসের নাম ঘোষণা করা হয়।

প্রথমে সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে লাখো মানুষ প্রতিবাদ–বিক্ষোভে নামেন। পরে তা শেখ হাসিনার ১৫ বছরের কঠোর শাসনের অবসানের দাবিতে দেশব্যাপী গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়।

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে যান। এর আগে ৭০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হন, যাঁদের মধ্যে অনেকে পুলিশের নৃশংস দমন–পীড়নে প্রাণ হারান।

শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে বাংলাদেশ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাঁর শাসনামলে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে তাঁর রাজনৈতিক বিরোধীদের গণগ্রেপ্তার ও বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়টি আছে।

ড. ইউনূস বলেন, ‘যেকোনো সরকারই স্থিতিশীলতার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকবে। আমরাও উদ্বিগ্ন।’

আরও পড়ুন

ড. ইউনূস বলেন, ‘আশা করছি, আমরা এটি সমাধান করতে পারব এবং শান্তিপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পাব।’

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বিপ্লবের পর মাত্র তিন মাস পেরিয়েছে।

প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। দেশটি আর্থিকভাবে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি প্রায় ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার অপরিশোধিত বিল পরিশোধের দাবিতে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে।