রাইজ অ্যাবোভ অল: অনুপ্রাণিত হলো হাজারো মানুষ
সফলভাবে শেষ হলো পাবলিক স্পিকিং প্ল্যাটফর্ম ‘রাইজ অ্যাবোভ অল ২০২৪’-এর অষ্টম আয়োজন। গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন, যাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন শিক্ষার্থী ও তরুণ পেশাজীবী।
অনুষ্ঠানটির আয়োজক ডন সামদানি ফ্যাসিলিয়েশন অ্যান্ড কনসালট্যান্সি; টাইটেল পার্টনার বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ, পাওয়ার্ড বাই গ্রামীণফোন এবং স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার মাস্টারকার্ড। সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলো ডটকম।
দেশের বিভিন্ন চিন্তাশীল ব্যক্তি, উদ্যোক্তা এবং ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টদের একত্র করে দর্শকদের চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগায় আয়োজনটি। এ বছর বিশেষ আকর্ষণ ছিল অনুপ্রেরণামূলক কি-নোট স্পিকার, লাইভ পডকাস্ট, ক্যারিয়ার সেশন আর এক্সক্লুসিভ পারফরম্যান্স, যা দর্শকদের মনে গভীর প্রভাব ফেলে।
বক্তারা তাঁদের নেতৃত্বগুণ, সফলতার গল্প আর সংকট কাটিয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা দর্শকদের সঙ্গে শেয়ার করেন। ব্যাংকিং, আর্থিক প্রবৃদ্ধি এবং কমিউনিকেশন টুলস বিষয়ে বলেন মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। একটি টেকসই ব্যবসা মডেল তৈরির পাশাপাশি সামাজিক প্রভাবের ভারসাম্য রক্ষা করার গল্প বলেন গ্রামীণ ডানোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দীপেশ নাগ।
গ্রামীণফোনের চিফ হিউম্যান রিসোর্স অফিসার সৈয়দা তাহিয়া হোসেন বলেন, ‘অন্যদের জন্য কাজ করো, নিজেকে চ্যালেঞ্জ করো, আর যতটা পারো তা শেখার চেষ্টা করো। দেখবে, জীবনটা কত সুন্দর হয়ে ওঠে।’
মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘রাগকে নিজের ওপর দখল নিতে দিয়ো না। পুরো ক্যারিয়ারে স্ট্রেস ভালোভাবে ম্যানেজ করা খুবই জরুরি।’
টেন মিনিট স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আয়মান সাদিক যুবস্বাস্থ্য এবং কল্যাণ নিয়ে তাঁর শক্তিশালী মতামত উপস্থাপন করেন।
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের গ্রুপ সিইও ও ডিরেক্টর সাজ্জাদ রহিম চৌধুরী বলেন, ‘আপনার স্বপ্নের পিছু দৌড়ান, যদি তা বাস্তবে রূপ দিতে চান।’
জীবনে সফল হওয়ার জন্য মানসিক শক্তি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ওপর গুরুত্ব দেওয়া কথা বলেন গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশন শরফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।
‘স্বপ্ন’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির নাসির বলেন, ‘আমি হেরে যাওয়া মানুষ হয়েও দেশের জন্য কাজ করব।’
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফ জহির বলেন, ‘সাফল্য একদিনে আসে না। এটি বছরের পর বছর তৈরি করতে হয়। প্রথম পদক্ষেপ হলো বড় স্বপ্ন দেখা।’
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান এবং ব্রিটিশ–আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেহজাদ মুনিমের দ্বৈত সেশনটি দর্শকেরা বেশ উপভোগ করেন। তাঁরা দুজন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা এবং ব্যবসা পরিচালনায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার গল্প বলেন।
এ ছাড়া বিশেষ সেশন ছিল ‘শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ লাইভ’; যেখানে দুজন উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক আইডিয়ার জন্য বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন অ্যাডকম হোল্ডিং গ্রুপের নাজিম ফারহান চৌধুরী, এনচেঞ্জড ইভেন্টের সওসান খান মঈন এবং ম্যাজেস্টো লিমিটেডের গোলাম মুর্শেদ।
‘বিজনেস সাস্টেইন্যাবিলিটি ইন মিডিয়া’ বিষয়ে আলোচনা করেন প্রথম আলোর চিফ ডিজিটাল বিজনেস অফিসার এ বি এম জাবেদ সুলতান এবং ডেইলি স্টারের চিফ বিজনেস অফিসার তাজদিন হাসান। তাঁরা ডিজিটাল কনটেন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি মিডিয়া-শিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য কনটেন্টের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
নাফিস সেলিম ও সাজ্জাদ বিন আহসান সৌরভের হাস্যরসপূর্ণ গল্পে ‘টু সেন্টস পডকাস্ট’-এর লাইভ শোটি হয়ে ওঠে জমজমাট ও উপভোগ্য। জয়নাব মাকসুদ বলেন তাঁর ‘আমিরা’ ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠার গল্প। অভিনেত্রী ঐশী তাঁর ভক্তদের প্রশ্নের উত্তর দেন। অভিনেত্রী সাফা কবির পরিচালনা করেন একটি অনুপ্রেরণামূলক সেশন। ইভেন্টের শো-স্টপার সালমান মুক্তাদির দর্শকদের সঙ্গে সেশন করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। শেষে ছিল কণ্ঠশিল্পী মিনার রহমান ও তাঁর ব্যান্ডের সংগীত পরিবেশনা।