দুই দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রামে পেঁয়াজের দাম বাড়ল কেজিতে ১৫ টাকা
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রপ্তানিমূল্য বেঁধে দেওয়ার পর দেশের বাজারে বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। চট্টগ্রামের বৃহত্তর পাইকারি আড়ত খাতুনগঞ্জে আজ সোমবার মানভেদে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকায়।
গত শনিবার একই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। অর্থাৎ দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। আর সপ্তাহ ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা।
আজ সকালে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন আড়তদারেরা। কিছুটা মাঝারি মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। তবে সকালে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজবোঝাই ট্রাকের সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে।
আড়তদারেরা বলছেন, বর্তমানে পেঁয়াজের বাজার ভারতনির্ভর হয়ে গেছে। এদিকে রপ্তানিমূল্য বেঁধে দিয়েছে ভারত। ফলে আমদানি খরচও বেড়েছে। পাশাপাশি ভারতের বাজারেও পেঁয়াজের দাম বেশি। সব মিলিয়ে এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারে।
এর আগে, নিজেদের দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম ঠিক রাখতে রপ্তানির ন্যূনতম মূল্য বেঁধে দেয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি টন পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য ৮০০ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসাবে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য পড়বে ৬৭ রুপি।
এ সিদ্ধান্ত গতকাল রোববার থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এর মধ্যে আবার রপ্তানির ন্যূনতম দাম বেঁধে দেওয়া হলো।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেছেন, চট্টগ্রামে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদাই বেশি। তবে এই পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা উচিত।
এদিকে পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার, রিয়াজউদ্দিন বাজার, কর্ণফুলী কমপ্লেক্স ও আশপাশের এলাকার খুচরা দোকানগুলোয় আজ প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।
কর্ণফুলী কমপ্লেক্স কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মোহাম্মদ শাকিল বলেছেন, খাবারের দোকানের জন্য পেঁয়াজ কিনতে এসেছেন তিনি। গত শনিবার ৮৫ টাকা দরে কিনেছিলেন। এক দিনের মধ্যে যে ১৫ টাকা বাড়বে, তা তাঁর ধারণায় ছিল না। এখন দোকানের সামগ্রীর দামও বাড়াতে হবে।
চলতি বছরের শুরুতে প্রতি কেজি আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। সরবরাহ কমে যাওয়ায় মে মাসের শুরুতে দাম বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এই পেঁয়াজ। তবে জুন-জুলাইয়ে ৫০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ভারতীয় পেঁয়াজ।
বাজারে পেঁয়াজের দাম আরেক দফা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় পৌঁছায় আগস্টের মাঝামাঝি। সে সময় পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে ভারত সরকার। এর দুই মাসের মাথায় এবার পেঁয়াজের রপ্তানিমূল্য বেঁধে দিল ভারত।