বরগুনা-২ (বামনা-বেতাগী-পাথরঘাটা) উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এক হয়ে নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে দলীয় প্রার্থী শওকত হাচানুর রহমান ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন।
কয়েকজন নেতা বলেন, শওকত হাচানুর কোনো কারণে যদি তিনি হেরে যান তবে তা দলের নেতা-কর্মীদের কারণেই হবে।
বরগুনা-২ আসনের তিনটি উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল বেশ কয়েকজন নেতা জানান, শওকত হাচানুর রহমান মনোনয়ন পাওয়ার পর দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ও অন্যান্য নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও গত কয়েক দিনে সেসব ক্ষোভ মিটিয়ে দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে প্রায় সবাই মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু রোববার বেতাগী শহরের খাসকাচারি মাঠে দলীয় প্রার্থীর শেষ জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ও সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমানকে পরিচয় না করিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে হট্টগোল বাধে।
সমাবেশ মঞ্চে ওই নেতা উত্তেজিত হয়ে সভা পরিচালনাকারী বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে গালিগালাজ করেন। সমাবেশে সভাপতিত্বকারী বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাফিসুর রহমান এর প্রতিবাদ জানালে ওই জেলা নেতা তাঁকেও গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে তীব্র হট্টগোল সৃষ্টি হলে অনেকে সমাবেশ ছেড়ে চলে যান।
সমাবেশ মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বরগুনা-১ আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্রদেবনাথ শম্ভু ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শওকত হোসেন এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনজন নেতার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শেষ করা হয়।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সমাবেশ চলাকালে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝির কারণে একটু সমস্যা হয়েছিল। পরে তা মিলমিশ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বেতাগী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাফিসুর রহমান বলেন, ‘দুঃখিত ভাই। ওই দিন কিছুই হয়নি। অনুগ্রহ করে আমার কাছে কিছু জানতে চাইবেন না।’
এ ঘটনার পর বেতাগী, বামনা ও পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। দলের উপজেলা পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা মনে করেন, রোববারের ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল। শওকত হাচানুরের বিরোধীদের ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটেছে বলে তাঁরা মনে করছেন।
পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকন মো. শহিদ বলেন, জনগণ যাতে দেখে শওকত হাচানুরের সঙ্গে দল নেই সেটা বোঝানোর জন্যই এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাঁকে হারাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে। দলের নেতা-কর্মীরা এক হয়ে কাজ না করলে ফলাফল উল্টে যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।