'বাইতুল বিলাল' ও গুডস হিল ফাঁকা!
গুডস হিল। চট্টগ্রাম নগরে সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীদের বাড়ি। এটাই ছিল একাত্তরে চট্টগ্রামের অন্যতম নির্যাতন কেন্দ্র। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের ধরে এনে এখানে আটকে রাখা হতো। তারপর চলত নির্যাতন ও হত্যা। পুরো ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন ফজলুল কাদের চৌধুরী ও তাঁর ছেলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাকা চৌধুরীর ফাঁসির রায় ঘোষণার আগে থেকেই গুডস হিলের সামনে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছিল। সকাল থেকেই প্রায় ফাঁকা হয়ে পড়ে গুডস হিলের সামনের সড়কটি।
এদিকে ভবনের মূল প্রবেশদ্বার ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন প্রহরীরা। কয়েকবার চেষ্টার পর কথা হয় তত্ত্বাবধায়ক আজিজুল হকের সঙ্গে। প্রবেশদ্বারের পাশেই তাঁর কক্ষ। দেয়ালে টাঙানো আছে চট্টগ্রাম ও রাঙ্গুনিয়ার পূর্ণাঙ্গ মানচিত্র। এ ছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ফজলুল কাদের চৌধুরী ও সাকা চৌধুরীর ছবি ঝুলছে দেয়ালে।
সাকা চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন গুডস হিলের তত্ত্বাবধায়ক আজিজুল হক। তিনি বলেন, ‘তিনি (সাকা) এমন কী অপরাধ করেছেন, যার কারণে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় শুনে অবাক হলাম।’
রাউজানের গহিরায় সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি। দাদার আমলের বাড়ির সামনে ১৯৯৩-৯৪ সালে সাকা চৌধুরীরা নির্মাণ করেন দ্বিতল আরেকটি দৃষ্টিনন্দন ভবন। নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাইতুল বিলাল’। একসময় বাড়ি সরগরম থাকত কর্মী-সমর্থকদের পদচারণে। গতকাল রায় ঘোষণার পর সেখানে গিয়ে দেখা যায় নীরব-নিথর চারদিক। কোথাও কেউ নেই। বাইতুল বিলালের দেখাশোনা করেন সত্তরোর্ধ্ব ফরিদুল আলম। তাঁকে পাওয়া গেল বাড়ির সামনেই। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মামলার রায় শুনেছেন কি না, জিজ্ঞেস করতেই ফরিদুল বললেন, ‘আল্লার হুকুমে ফাঁসির রায় দিয়েছে। এখন তো সবকিছু তারা ইচ্ছামতো করছে।’