হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড রপ্তানি বাড়ছে, আয় ২০০ কোটি টাকা
দেশে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড উৎপাদনকারী অন্তত ৬টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় উৎপাদিত পণ্য দেশে ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি রপ্তানিও হয়। সরকার রপ্তানিতে নগদ সহায়তাও দেয়।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০৭ কোটি টাকার সমান।
রপ্তানি আয় দ্রুত বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যে পরিমাণ রপ্তানি হয়েছে, তা আগের অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ২৩ শতাংশ বেশি। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের পুরো সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে তিন গুণ।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি রাসায়নিক, যা বস্ত্রসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহার করা হয়। যেসব দেশে বস্ত্র কারখানা বেশি, সেখানেই মূলত রপ্তানি করেন বাংলাদেশের রপ্তানিকারকেরা। ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানি করেছে ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে। মোট ১৪টি দেশে রাসায়নিকটি রপ্তানি হয়।
অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সামুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স, তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স, এসএম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচপি কেমিক্যালস লিমিটেড, ইনফেনিয়া কেমিক্যাল ও আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্স।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের পর সেখানে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রয়েছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বিএম কনটেইনার ডিপোর মালিকানা রয়েছে স্মার্ট গ্রুপের। গ্রুপটিরই অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আল-রাজী কেমিক্যাল কমপ্লেক্স।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড একটি রাসায়নিক যৌগ। এটি যদি উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে।
বাংলাদেশের হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড আমদানিতে ভারত ও পাকিস্তান অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করেছে। ২০১৬ সালের মার্চে পাকিস্তান ট্যারিফ কমিশন বাংলাদেশি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডে ১২ শতাংশ অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপ করে। এরপর ২০১৭ সালে ভারতও বাংলাদেশি হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড আমদানিতে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বসায়।
কোনো কোম্পানি নিজ দেশে বিক্রীত দামের চেয়ে কম দামে রপ্তানি করলে তাকে ডাম্পিং হিসেবে গণ্য করতে পারে আমদানিকারক দেশ। এর বিপরীতে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক বসাতে পারে।
সামুদা কেমিক্যালসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আকরামুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত ও পাকিস্তান অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক আরোপের পর রপ্তানিকারকেরা নতুন বাজার খোঁজা শুরু করে। এখন নতুন নতুন বাজারে পণ্যটি রপ্তানি হচ্ছে।
হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রপ্তানিতে সরকার ভর্তুকি দেয় ১০ শতাংশ। মানে হলো, ১০০ টাকা রপ্তানি করলে সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া যায় ১০ টাকা।