স্বাস্থ্যমন্ত্রী দুর্নীতির সুপার মডেল: জি এম সিরাজ
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ‘দুর্নীতির সুপারমডেল’ আখ্যা দিয়েছেন বিএনপির সাংসদ জি এম সিরাজ। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের একটি নমুনা স্থাপন করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে জি এম সিরাজ এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে—এমন মন্তব্যের পাল্টায় জি এম সিরাজ বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী! মিঠু, আফজাল, আজাদ, রাজ্জাক, জাহের, সাজ্জাদ, হুমায়ুন, মামুন, সাত্তার, সাহেদ, মালেক তারা কোন র্যাম্পের মডেল, জাতি জানতে চায়। জাতি জানে, এরা দুর্নীতির মডেল। আর আপনি হলেন দুর্নীতির সুপারমডেল।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়ে বিএনপির এই সাংসদ বলেন, ‘মাথা ঠিক থাকলে শরীর ঠিক থাকে। মাননীয় সংসদ নেতা, আপনি আপনার জিরো টলারেন্সের একটি নমুনা দয়া করে দেখান। বিশেষজ্ঞ, টেকনোক্র্যাট বসিয়ে দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করুন। সেবা খাতটি রক্ষা পাবে। অব্যবহৃত টাকা ফেরত যাবে না। অসুস্থ স্বাস্থ্য খাত সুস্থ হবে।’
বিএনপির সাংসদ জি এম সিরাজ বলেন, সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান সরকার–সংশ্লিষ্ট বিশেষ সুবিধাভোগীরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এখানে কোনো জবাবদিহি নেই। অন্যায়–অপরাধের বিচার নেই। দুর্নীতি বন্ধ বা সহনীয় পর্যায়ে আনতে না পারলে বাজেট থেকে কোনো উপকার আসবে না। কিছু মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিবিশেষের কারণে প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স মুখ থুবড়ে পড়েছে।
নাসির ভালো লোক
চলচ্চিত্রশিল্পী পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার জাতীয় পার্টির নেতা নাসির ইউ আহমদকে ‘ভালো লোক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতীয় পার্টির সাংসদ মুজিবুল হক। আজ বাজেট আলোচনায় তিনি বলেন, নাসিরকে তিনি চেনেন, জাতীয় পার্টি করেন। তিনি ভালো লোক। তবে তাঁর বক্তব্যের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তখন তাঁর মাইক বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে সাংসদ মুজিবুল হক বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন বিদেশে টাকা পাচার যাঁরা করেন, তাঁদের নাম বলার জন্য। আমরা কি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি নাম আমরা বলব? নাম তো আপনি বের করবেন। আপনি বাজেট বক্তৃতায় ১০ পৃষ্ঠার বিবৃতি দিলেন বিদেশি বিভিন্ন ব্যক্তির বক্তব্যের। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্স ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) প্রতিবেদনে বলেছে, গড়ে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ৭৫৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার পাচার হয়, যা প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আপনার (অর্থমন্ত্রীর) অনেক সংস্থা আছে, সেগুলো দিয়ে বের করুন।’
সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান সরকার–সংশ্লিষ্ট বিশেষ সুবিধাভোগীরা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। এখানে কোনো জবাবদিহি নেই।
মুজিবুল হক বলেন, সাংসদেরা নির্বাচনের সময় হলফনামায় সম্পদের হিসাব দেন। সামরিক-বেসামরিক আমলা, ব্যবসায়ীদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বিষয়টা দেখলে বাজেটে টাকার অভাব হবে না। আজ গ্রামে যান কী সুন্দর সুন্দর বাগানবাড়ি। বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায় রিসোর্ট, এত দামি দামি রিসোর্ট, সেই রিসোর্টের টাকা কোথা থেকে আসে? সেই রিসোর্ট গড়ার পয়সা কোথায় পায়? মন্ত্রী, এমপি, বেসরকারি-সরকারি আমলা, ব্যবসায়ী তারা কত ট্যাক্স দেয়, তাদের কী সম্পদ, সব হিসাব দেওয়া হোক। তিনি সাত দিনের মধ্যে হিসাব প্রকাশ করতে প্রস্তুত আছেন।
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে তিনি দেখেছেন একজন সাংসদ কানাডায় একটি বাড়ি কিনেছেন। কানাডায় সে বাড়িতে হাঁটছেন সাংসদের স্ত্রী। এইগুলো কি দোষারোপ? নাকি সত্য ঘটনা? এগুলো খুঁজে বের করা উচিত।