স্কুলে ঢুকে শিক্ষকদের ওপর হামলা
প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে একটি পক্ষ রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার হাজিপুর বদিউজ্জামান উচ্চবিদ্যালয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এতে শিক্ষকসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সন্ত্রাসীরা এক শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আহত তিনজন হলেন বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক প্রতাপ চন্দ্র সরকার, অফিস সহকারী মোকছেদুল হক ও পরিচালনা কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগে ত্রুটিজনিত কারণে আদালতে মামলা থাকায় প্রধান শিক্ষক মাহমুদ চৌধুরী প্রায় ছয় মাস ধরে বিদ্যালয়ে আসেন না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী প্রামাণিককে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে চার মাস আগে সাময়িক বরখাস্ত করে পরিচালনা কমিটি।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক না থাকায় চার মাস ধরে শিক্ষক ও কর্মচারীরা বেতনভাতা ব্যাংক থেকে তুলতে পারছেন না। বেতনভাতার দাবিতে শিক্ষকেরা সাত দিন ধরে ক্লাস বর্জন করে আসছিলেন। এ পরিস্থিতিতে পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ কে এম ফকরুল ইসলাম বেলা ১১টায় সভা আহ্বান করেন। সভা শুরুর আগে ৮-১০ জন সন্ত্রাসী লাঠি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিক্ষকদের কক্ষে ঢুকে হামলা চালায়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন প্রতাপ চন্দ্র সরকার অভিযোগ করেন, ‘পরিচালনা কমিটির সভায় আমাকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হতে পারে এমন ধারণা করেছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক তৈয়ব আলী। এ কারণে তিনি সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে বিদ্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা আমাকে লাঠিপেটা করে বিদ্যালয় থেকে বাইরে নিয়ে সবার সামনে কান ধরে ওঠবস করায় এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ গ্রহণ না করার ওয়াদা করায়।’
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে স্কুলে ঢুকে স্যারদের মারধর শুরু করলে আমরা সবাই ভয়ে পালিয়ে যাই।’
তৈয়ব আলী প্রামাণিক তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর ওই হামলা চালিয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোবাশ্বির হোসেন জানান, হামলার ঘটনা সত্য। এটা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির ব্যাপার। এখানে তাঁর কিছু করার নেই। বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আহত শিক্ষকেরা থানায় এখনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’