সালিশে ‘একঘরে’ করা তিন পরিবারকে রক্ষার নির্দেশ হাইকোর্টের
গ্রাম্য সালিস না মানায় একঘরে করে রাখা মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কোরবানপুর গ্রামের ভুক্তভোগী তিন পরিবারকে নিপীড়ন থেকে রক্ষায় নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
স্বরাষ্ট্রসচিব, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে গত ২৬ জানুয়ারি ভুকশিমইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং গত ১৬ মার্চ কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষে করা আবেদন নিষ্পত্তিতে নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
‘সমাজচ্যুত’ করা নিয়ে কুলাউড়া থানা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন দিয়ে ফল না পেয়ে তিন ভুক্তভোগী পরিবারের তিনজন সদস্য ওই রিট আবেদন করেন। তিনজন হলেন মো. আকমল হোসেন, কাজল আহমেদ ও রুমানা আক্তার।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে গ্রাম্য সালিস না মেনে মামলা করায় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে ওই তিন পরিবারকে একঘরে করে রেখেছেন সালিসকারীরা। তিন পরিবারের সদস্যদের সমাজচ্যুত করা হয়েছে। স্থানীয় সালিসকারীরা এটি করেছেন। তাঁরা মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, হাটবাজার কোথাও যেতে পারছেন না, যা মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। বিভিন্ন সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার না পেয়ে তাঁরা রিটটি করেন। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওই নির্দেশ দেন।