জীবিকার সন্ধানে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষ পুড়ছে, পুড়ছে স্কুলগামী অবোধ শিশু। আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। বিজয়ের মাসে তাঁরা বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে। তাই আর বসে থাকা নয়। এবার গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের নিচে জড়ো হয়ে ছাত্র ও সংস্কৃতিকর্মীরা গতকাল বুধবার এভাবেই চলমান সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন।
‘রাজনীতির নামে সহিংসতা বন্ধ করো’ স্লোগান সামনে রেখে ছাত্র-জনতার এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিকেন্দ্রিক বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। বক্তব্যের পাশাপাশি প্রতিবাদী গান আর কবিতায় সহিংসতাকে ধিক্কার জানান সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন। তিনি বলেন, ‘ঝলসে যাওয়া এসব মানুষের কেউ কাজ শেষে, কেউ টিউশনি শেষে ফিরছিলেন। আবার কেউ বাবা-মা কিংবা পরিবারের অন্যদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন। এঁরা তো দগ্ধ হয়ে, লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে চাননি। আমরা যদি ভিডিও ফুটেজে দেখতে পারি কারা বোমা মারছে, কারা রেললাইন উপড়ে ফেলছে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের খুঁজে বের করতে পারে না কেন?’
ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব বলেন, ‘বাসা থেকে বেরুতে গেলেই স্বজনেরা এখন বাসে না উঠতে হুঁশিয়ার করে দেন। স্বাধীন দেশে কেন এমন হবে? বক্তৃতা, আলোচনা, সভা-সেমিনারের সময় নেই। সময় এখন রুখে দাঁড়াবার।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বি এম ফয়জুল্লার সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে স্লোগান ’৭১-এর সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামিল আকতার প্রমুখ বক্তব্য দেন। গান পরিবেশন করে সূর্যসারথী, প্রভাতফেরি, সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন ও গণমুক্তির গানের দল। সন্ধ্যায় সহিংসতার প্রতিবাদে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।