একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের সপ্তম পর্বের সম্মাননা অনুষ্ঠান আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এবারকার অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের ৫৯ জন ও একটি সংগঠনকে সম্মাননা জানানো হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সম্মাননা প্রদান করবেন। গতকাল সোমবার তথ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম এ কথা জানান।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা বিদেশি বন্ধুদের এবারকার সম্মাননায় ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমদ ও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী গুলজারিলাল নন্দকে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ দেওয়া হবে। এ ছাড়া অন্য ৫৭ ব্যক্তি ও মিসরভিত্তিক সংগঠন আফ্রো-এশিয়ান পিপলস সলিডারিটি অর্গানাইজেশনকে দেওয়া হবে ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’। ফখরুদ্দিন আলী আহমদের পক্ষে তাঁর ছেলে পারভেজ আহমদ ও গুলজারিলাল নন্দের পক্ষে তাঁর ছেলে তেজুস নাইক সম্মাননা গ্রহণ করবেন।
এ দফায় সম্মাননার জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে ভারতের ৪৪ জন, পাকিস্তানের চারজন, যুক্তরাষ্ট্রের চারজন, যুক্তরাজ্যের দুজন, জাপানের দুজন, শ্রীলঙ্কার একজন, তুরস্কের একজন ও মিসরের একজন রয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ সরকারের আমলে এটিই সর্বশেষ সম্মাননা। এরপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের এই সম্মাননা দেওয়া হবে। সম্মাননার জন্য প্রায় ৫০০ জনের তালিকা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে সম্মাননা পাওয়া বিদেশি বন্ধুরা গতকাল সোমবার ঢাকায় পৌঁছান। এ দিন বিকেলে তাঁরা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করেন। রাতে অতিথিরা তাঁদের সম্মানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের পাশে দাঁড়ানো বিদেশি বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ পর্যন্ত ছয়টি পর্বে ব্যক্তি ও সংগঠন মিলিয়ে ২৭৮ বিদেশিকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে বিভিন্ন দেশের ২৬৯ জন ও নয়টি সংগঠন রয়েছে।
২০১১ সালের ২৫ জুলাই ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’ দেওয়ার মাধ্যমে বন্ধুদের সম্মাননা জানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইন্দিরা গান্ধীর পক্ষে তাঁর পুত্রবধূ ও ভারতের কংগ্রেস পার্টির সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে সম্মাননা গ্রহণ করেন।
এ ছাড়া গত ৪ মার্চ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে গ্রহণ করেন ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’।