রানা প্লাজার ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবি
ঢাকার সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার ক্ষতিগ্রস্ত দোকানমালিক ও ব্যবসায়ীরা তাঁদের পুনর্বাসন করার এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে প্রতীকী অনশন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁরা ওই ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।
বেলা ১১টা থেকে দুইটা পর্যন্ত কর্মসূচি চলে। এতে ওই ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত দেড় শতাধিক দোকানমালিক ও ব্যবসায়ী অংশ নেন। রানা প্লাজা দোকান মালিক সমিতি এ কর্মসূচির আয়োজন করে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। বেলা দুইটায় ওই সংগঠনের মহাসচিব এস এম কাদের দোকানমালিক ও ব্যবসায়ীদের শরবত পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এ সময় সাভার বাজার রোড ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ওবায়দুর রহমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
রানা প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান জানান, ভবনটি ধসে পড়ায় তাঁদের ১৪২টি দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে তাঁদের ৪৭ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু সরকার তাঁদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। এতে তাঁরা পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
রানা প্লাজার দ্বিতীয় তলায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের বাসিন্দা শাহাদত হোসেনের কাপড়ের দোকান ছিল। তিনি জানান, তাঁর দোকানে প্রায় ৩০ লাখ টাকার কাপড় ছিল। ভবন ধসে পড়ায় তিনি কোনো কিছুই উদ্ধার করতে পারেননি। তিনি এখন নিঃস্ব। অভাব তাকে ঘিরে ধরেছে। টাকার অভাবে তাঁর বড় মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ী সেলিম হোসেন জানান, ২০১২ সালে রানা প্লাজার দ্বিতীয় তলায় তিনি ২০ লাখ টাকা দিয়ে একটি দোকান কিনেছিলেন। ভবন ধসে পড়ায় তাঁর সবই গেছে। এখন স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে শূন্য হাতে গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঢাকার নারিন্দার বাসিন্দা বাদল শাহ জানান, রানা প্লাজায় তাঁর কাপড়ের দোকান ছিল। ভবন ধসে পড়ায় তাঁর ৪০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংসার চালানোর জন্য এখন তিনি সাভারের একটি কাপড়ের দোকানে আট হাজার টাকা বেতনে চাকরি করছেন।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মাহাসচিব এস এম কাদের বলেন, ধসে পড়া ভবনের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ করে তা ক্ষতিগ্রস্ত দোকানমালিক ও ব্যবসায়ীদের বরাদ্দ দিতে হবে।