যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বরগুনার বামনা উপজেলার পশ্চিম গোলাঘাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হানিফ সরদারকে (৪৫) গত রোববার গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে।
যৌন নিপীড়নের শিকার বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানায়, অনেক দিন ধরে নিপীড়নের শিকার হলে বিষয়টি সে তার মাকে জানায়। শিক্ষার্থীর মা বিষয়টি বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে জানালে ওই শিক্ষক গত শনিবার রাতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে তা জানান। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে বামনা থানার পুলিশ রোববার দুপুরে হানিফ সরদারকে আটক করে। পরে মেয়েটির মা রোববার রাতে বামনা থানায় এ ঘটনায় মামলা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতিমা বেগম বলেন, ‘পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে অভিযোগ আসার পর তিনি আমাকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেন। এরপর আমি ১০ জন ছাত্রীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তারা সবাই নানাভাবে ওই শিক্ষকের যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছে।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রহমত উল্লাহ বলেন, ‘মাস দুয়েক আগেও একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক আমাদের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন।
বিদ্যালয় ও ওই শিক্ষকের মানসমঞ্চানের কথা বিবেচনা করে আমরা বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছিলাম।’
ভুক্তভোগীরা জানায়, হানিফ সরদার দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের দোতলার একটি কক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়াতেন। সন্ধ্যা থেকে রাত ১০-১১টা পর্যন্ত পড়ানোর সময় তিনি ছাত্রীদের নানাভাবে যৌন নিপীড়ন করতেন। টাকার প্রলোভন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেওয়াসহ নানা কৌশলে তিনি ছাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়ন চালাতেন। তাঁর কথামতো কোনো শিক্ষার্থী এতে রাজি না হলে পড়া না পারার অজুহাতে তাকে মারধর করতেন।
হানিফ সরদার তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমাকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান গতকাল সোমবার বলেন, ‘যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা হওয়ার পর হানিফ সরদারকে গ্রেপ্তার করে গতকাল সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছি।’