যশোরে রাজপথে আ.লীগের দুই পক্ষের শক্তির মহড়া!
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বিভক্তি এখন রাজপথে শক্তি দেখানোর পর্যায়ে নেমেছে। গত কয়েক দিনে দুই পক্ষের নেতারা আলাদা সমাবেশ করে কার কত কর্মী-সমর্থক আছে, তা জানান দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এক পক্ষের সমাবেশে প্রধান অতিথি যশোর সদর আসনের সাংসদ খালেদুর রহমান এবং অপর পক্ষে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার।
আজ মঙ্গলবার জেলা ছাত্রলীগের মানবসম্পদ-বিষয়ক সম্পাদক নিয়াম মাহমুদ শাহিনের সভাপতিত্বে যশোর টাউন হল মাঠে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাংসদ খালেদুর রহমান।
সরকারি এমএম কলেজ ছাত্রলীগের ব্যানারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলেও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অবশ্য গতকাল সোমবার রাতেই শাহিনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এমএম কলেজের ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। অথচ ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে সমাবেশ করা হচ্ছে। ওই সমাবেশ বয়কটের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। তার পরও সমাবেশে কয়েক হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে বলে সমাবেশ থেকে নেতারা দাবি করেছেন। সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাউথ সাউথ পুরস্কার জেতার জন্য শহরে আনন্দ মিছিল বের করা হয়।
এদিকে শহরের চিত্রা মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে আলোচনা সভা ও আনন্দ শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার উপস্থিত ছিলেন বলে জানা যায়।
কয়েক দিন আগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুল হকের সভাপতিত্বে একই স্থানে চিত্রা মোড়ে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে শাহিন চাকলাদার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে উপস্থিতি ছিলেন।
দুই পক্ষের রাজপথের নামার ব্যাপারে জানতে চাইলে যশোর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটি রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি নয়। মনোনয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই যার যার জায়গা থেকে শক্তির জানান দেওয়া হচ্ছে। দলের দুই পক্ষ যে শো-ডাউন করছে, তা মূলত মনোনয়নকেন্দ্রিক।’
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একাধিকবার যশোরে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ঐক্যবদ্ধভাবে মিলেমিশে রাজনীতি করার কথা বলেছেন। কিন্তু শীর্ষ নেতাদের এ আহ্বানে দুই পক্ষের কোনো সাড়া নেই। বরং বিভক্তি আরও তুঙ্গে উঠেছে। এ কারণে দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অনেকে হতাশা প্রকাশ করেছেন।