মেয়েদের নিয়ে জাপানি মায়ের বেড়ানো ঠেকানোর আবেদনে সাড়া নেই
দুই মেয়ের সঙ্গে চার রাত কাটানো ও তাদের নিয়ে বাসার বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে জাপানি নারী নাকানো এরিকোকে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আদেশ দেননি সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত।
বৃহস্পতিবার চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান দুই পক্ষের আইনজীবীর শুনানি শেষে ‘নো অর্ডার দেন’। ফলে এরিকোকে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকল।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম। মায়ের পক্ষে ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির।
ফাওজিয়া করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাচ্চাদের মা একবার যদি বাচ্চাদের নিয়ে জাপানি দূতাবাসে গিয়ে ওঠেন, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না। এই পরিপ্রেক্ষিতেই চেম্বার আদালতে আবেদন করেছি আমরা।’
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী ৯, ১১, ১৩ ও ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে শিশুদের সঙ্গে গুলশানের বাসায় মা নাকানো এরিকো থাকবেন। শিশুগুলোর বাবা এই চার রাত সেখানে থাকতে পারবেন না বলে জানান আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
গত বুধবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। আদালত বলেছিলেন, ‘শিশুদের বাবা যদি মনে করেন, তিনিও কয়েক ঘণ্টার জন্য তাদের নিয়ে বাইরে বেড়াতে যাবেন, যেতে পারবেন।’
আদালত বলেছিলেন, ৮ সেপ্টেম্বর রাতে বাবা শিশুদের সঙ্গে থাকতে পারবেন। তবে ৯, ১১, ১৩ ও ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে শিশুরা মায়ের সঙ্গে থাকবে। এক দিন পরপর দেওয়া হলো। এ সময় ওই বাসায় দিনে শিশুদের বাবা থাকবেন। মা যদি শিশুদের নিয়ে বেড়াতে যেতে চান, তা পারবেন। শিশুদের বাবা মনে করলে তিনিও দু-এক ঘণ্টার জন্য তাদের নিয়ে বাইরে বেড়াতে যেতে পারবেন।
গত ৩১ আগস্ট হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের পরদিন ১ সেপ্টেম্বর থেকে গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে রয়েছে জাপান থেকে নিয়ে আসা ১০ ও ১১ বছর বয়সী দুই শিশু।
শিশুদের বাবা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইমরান শরীফ ওই বাসায় তাদের রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
হাইকোর্টের ওই আদেশ সংশোধন চেয়ে শিশুদের মা এরিকো ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন দাখিল করেন। এতে শিশুদের সঙ্গে তাদের বাবা ইমরান শরীফের সময় কাটানোর তারিখ নির্ধারণ করে দেওয়া, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা সংরক্ষণের জন্য ইমরান শরীফ কর্তৃক বাসায় বসানো সিসিটিভি ক্যামেরা অপসারণ, বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম থেকে তাঁর (এরিকো) বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভিডিও অপসারণে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা, ভিডিও তৈরি ও আপলোডে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
শুনানি নিয়ে আদালত বলেন, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এরিকোর বিরুদ্ধে অবমাননাকর ভিডিও অপসারণে পদক্ষেপ নিতে বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে বলা হলো। ইমরান শরীফের ক্ষেত্রে অবমাননাকর ভিডিও থাকলে তা–ও সরাতে পদক্ষেপ নিতে বলা হলো। এসব ভিডিও তৈরি ও আপলোডে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হলো। সিসিটিভি ক্যামেরা ঘরের বাইরের দিকে বসবে।