শাহজালাল বিমানবন্দরে কার পার্কিংয়ের ছাদে করোনা পরীক্ষাগারের স্থান, আপত্তি
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে করোনার পরীক্ষাগার স্থাপনের জায়গা নির্ধারণ করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে পরীক্ষাগার স্থাপনের অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।
বিমানবন্দরে পরীক্ষাগার স্থাপনে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা দিতে বেবিচক বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সভা করে। বিমানবন্দরে বেবিচকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, বিমানবন্দরের বহুতল কার পার্কিংয়ের ছাদে করোনার পরীক্ষাগার বসানোর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সাতটি প্রতিষ্ঠানকে এসওপি জমা দিতে বলা হয়েছে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে। সেই এসওপি সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। আমিরাত সম্মতি দিলে পরীক্ষাগার বসানো হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষাগার বসানোর কাজ শেষ করতে পারবে না, তাদের জরিমানা করা হবে। উল্লেখ্য, আমিরাত সম্প্রতি শর্ত দেয়, সে দেশে কর্মী পাঠাতে হলে ফ্লাইট ছাড়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দরে র্যাপিড পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করে নেগেটিভ সনদ নিতে হবে।
এদিকে বিমানবন্দরে ছাদের খোলা জায়গার পার্কিংয়ে করোনার পরীক্ষাগার স্থাপনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। জয়নুল হক সিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর সুব্রত সাহা বলেন, ‘খোলা জায়গা বলে প্রতিবন্ধকতা আছে। এটা খুব আপত্তিকর। তাঁবু বা ভ্রাম্যমাণ শেড বসিয়ে কাজ হবে না। সেখানে অনেক বাতাস। ভ্রাম্যমাণ গাড়ি বসিয়েও কাজ করা সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে সভায় আপত্তি জানিয়েছি।’
আপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-আল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কার পার্কিংয়ের ছাদে পরীক্ষাগার হবে, এটা আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এখন প্রথমে এক কথা, পরে আরেক কথা বললে হবে না। কোনো প্রতিষ্ঠান কেউ পরীক্ষাগার করতে না চাইলে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে পারে।’
করোনার পরীক্ষার মূল্য বিষয়ে বেবিচকের চেয়ারম্যান ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই সাতটি প্রতিষ্ঠান করোনা পরীক্ষার ভিন্ন ভিন্ন মূল্য প্রস্তাব দিয়েছে। আমরা একটি অভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করব।’
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে গত বুধবার সাত প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেয় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। অনুমোদন পাওয়ার তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে বিমানবন্দরে এই পরীক্ষাগার স্থাপন করবে প্রতিষ্ঠানগুলো। প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
পরীক্ষাগার স্থাপনের অনুমতি পাওয়া সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিদেশগামী যাত্রীদের ভুয়া করোনার রিপোর্ট দেওয়া, প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ৯ জুন সিএসবিএফ হেলথ সেন্টার ও স্টেমজ হেলথ কেয়ার (বিডি) লিমিটেডকে বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) মো. ফরিদ হোসেন মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট দেওয়ায় ওই দুটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আমরা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিলাম। পরে আমরা একটি টিম করে তাদের মেশিনারিজ পরীক্ষা করে দেখি, সেই পরীক্ষায় কোনো ভুল নেই। তাদের অন্য যে সমস্যাগুলো ছিল, সেগুলো তারা ঠিক করে আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করে। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আবার তাদের করোনার পরীক্ষা কার্যক্রম করার অনুমতি দিই।’