বিমানবন্দরে করোনার পরীক্ষামূলক পরীক্ষা শুরু
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে করোনার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। অস্থায়ীভাবে স্থাপিত একটি পরীক্ষাগারে এ পরীক্ষা করা হয়। যাত্রা শুরুর ছয় ঘণ্টা আগে এখানে পরীক্ষা করিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়েছেন ৪৬ যাত্রী।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ–উল আহসান আজ বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসায় এই যাত্রীদের বোর্ডিং করা হয়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইট সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পরীক্ষামূলকভাবে ৪৬ যাত্রীকে বুধবার করোনা পরীক্ষা করে আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি অবতরণের পর আমিরাত কর্তৃপক্ষ আবার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগারের মাধ্যমে এই যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করবে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনালের দোতলায় স্বাস্থ্য বিভাগের সামনে ৪৬ যাত্রীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনা সংগ্রহের পর পার্কিং জোনের মোবাইল পরীক্ষাগারে এসব নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাদ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে ৪৬ যাত্রীকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ৫০ জনের মধ্যে ৪ জন সময়মতো বিমানবন্দরে এসে উপস্থিত হতে পারেননি। করোনা পরীক্ষায় ৪৬ জনের নেগেটিভ ফল এসেছে।
৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা শনাক্তে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছানোর পর আবার এই যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করা হবে। তখনো ফল একই হলে তাঁরা দেশটিতে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। তবে সেখানে ওই ৪৬ যাত্রীর মধ্যে কারও করোনা শনাক্ত হলে তাঁদের আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ।
১৫ সেপ্টেম্বর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার বসাতে সাত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে নির্বাচন করে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ছয়টি প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) জমা দেয়। এসব এসওপি যাচাই করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঠানো হয়। তবে এর জবাব সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ এখনো দেয়নি।
গেল আগস্টে সংযুক্ত আরব আমিরাত সে দেশে যেতে যাত্রার ছয় ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষার শর্ত আরোপ করে। অথচ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা করার ব্যবস্থা ছিল না। এতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে যেতে পারছিলেন না প্রবাসীরা। কারও কারও ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে দ্রুত করোনার আরটি-পিসিআর পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন প্রবাসীরা। ১৪ সেপ্টেম্বর এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিচে প্রবাসীরা প্রতিবাদও করেন।
৬ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা শনাক্তে পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে নির্দেশের ১৬ দিন পর আজ বিমানবন্দরে পরীক্ষামূলকভাবে করোনার পরীক্ষা করিয়ে যাত্রীদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হলো।