বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন
জার্মানির রাজধানী বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনগুলোর মধ্য বার্লিনেই প্রথম এই আধুনিক প্রযক্তির ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরু হলো।
বার্লিনের কাইজারিন আউগুয়েস্তাা অ্যালে সড়কে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাাংলাদেশ সরকারের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। দূতাবাসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাঙালিরাসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদজ্জামান খান কামাল। এ ছাড়া জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবদু্াল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ই-পাসপোর্ট প্রযুক্তির সাথে জড়িত জার্মানি সংস্থা ভেরিডোসের পরিচালক আন্দ্রে রেশমায়ার এই আধুনিক প্রযুক্তিতে তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার কথা তুলে ধরেন। জার্মানিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট ও এমআরভি ভিসা পদ্ধতি পরিচালনা করবেন দূতাবাসের কনস্যুলার কাজী তুহিন রসুল।
ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার ৩ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং ১৬ লাখ ১৯ হাজার মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) ইস্যু করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, প্রধামন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মুজিব বর্ষে ই-পাসপোর্ট জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ২০১০ সাল থেকে বাংলাদেশ এমআরপি এবং বাংলাদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক বিদেশি নাগরিককে এমআরভি দেওয়া শুরু করেছে।
মন্ত্রী জানান, এমআরপি ও এমআরভির প্রবর্তন করে সরকার এই সেবার আধুনিকায়ন বন্ধ করেনি। বাংলাদেশের সব পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। বিমানবন্দরে ই-গেইট স্থাপন করা হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম। তিনি বলেন, গত ২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক ই-পাসপোর্টের উদ্বোধন ঘোষণা করে বলেছেন, ‘ই-পাসপোর্ট বাংলাদেশের জনগণের জন্য মুজিব বর্ষের উপহার।’ এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী চিন্তার সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোর মধ্যে জার্মানির বার্লিনে প্রথম ই-পাসপোর্টের রোল আউট আজ থেকে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ লাখ আবেদন জমা হয়েছে ই-পাসপোর্টের জন্য। প্রায় ১০ লাখ ই-পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব দূতাবাসে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম শুরু হবে।
সভাপতির বক্তব্যে পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আইয়ূব চৌধুরী বলেন, দেশের ৬৪টি জেলার ৬৯টি অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। শিগগিরই দেশের ৮০টি মিশনে এর কার্যকারিতা শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি বলিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।