সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির আদেশের পর গতকাল মঙ্গলবার নিজ নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ ও গাড়িতে আগুন দিয়েছেন সাকার অনুসারীরা। তবে যে এলাকা থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন, সেই ফটিকছড়ি উপজেলায় আনন্দ মিছিল হয়েছে। মিষ্টি বিতরণ করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা।
সাকা চৌধুরী নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙ্গুনিয়া ও ফটিকছড়ি থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। ফটিকছড়ি থেকে জয়ী হলেও রাঙ্গুনিয়ায় হেরে যান তিনি।
রাঙ্গুনিয়ার স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল ভোরে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনার আদুরপাড়া এলাকায় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান সাকার অনুসারীরা। এরপর ইছাখালী এলাকাসহ কয়েকটি স্থানে তিনটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আগুন লাগিয়ে দেন তাঁরা। রায় ঘোষণার পর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের নানা স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে এবং গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ ও ভাঙচুরের চেষ্টা চালান তাঁরা। এ সময় ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, নাশকতার অভিযোগে শাহাদাত নামের একজনকে একটি করাতসহ আটক করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থায় আছে বলে তিনি জানান।
তবে সাকার অনুসারীরা বিক্ষোভ দেখালেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা রাঙ্গুনিয়ায় আনন্দ মিছিল করেছেন। এদিকে সাকার রায়ে ফটিকছড়ি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ মিছিল বের হয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জামাল পাশা বলেন, এই যুদ্ধাপরাধীকে ফটিকছড়িবাসী সাংসদ নির্বাচিত করে এলাকা কলঙ্কিত করেছেন। এ রায়ের মধ্য দিয়ে সত্যের বিজয় হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের চিত্র: সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নগরে যান চলাচল ছিল কম। দুপুরের পর নগরের কয়েকটি স্থানে গাড়িতে আগুন দিয়েছেন সাকার সমর্থকেরা।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নগরের ৮০টি পয়েন্টে অতিরিক্ত দুই হাজার পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি নগরের থানা, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, দুপুরে রায় ঘোষণার পর নগরের রেলস্টেশন এলাকায় একটি যাত্রীবিহীন মিনিবাস (রাইডার) আগুন ধরিয়ে দেন সাকার সমর্থকেরা। এদিকে হাটহাজারী থানার ওসি এ কে এম লিয়াকত আলী জানান, রায় ঘোষণার পর সাকার সমর্থকেরা হাটহাজারী সড়কে ব্যারিকেড দেন। পরে পুলিশ গিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যারিকেড তুলে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। এ ছাড়া উপজেলার মদুনাঘাট এলাকায় একটি বাসে আগুন দেন সাকার সমর্থকেরা।