পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে ২৫ জুন। পরদিন থেকে টোল দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। সেতু বিভাগ এই সেতু থেকে এক বছরে প্রায় পৌনে ৫০০ কোটি টাকা আয় করতে চায়।
কারণ, এই আয় থেকেই সেতুর টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের ব্যয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করা হবে।
সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিকে দিনে গড়ে আট হাজার যানবাহন চলাচলের প্রত্যাশা করছে সেতু বিভাগ। এরপর তা পর্যায়ক্রমে বাড়বে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষায় বলা হয়েছিল, ২০২৫ সালে দিনে সেতু দিয়ে ৪১ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এই পূর্বাভাস অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কারণ, সেতু চালুর তিন–চার বছরের মধ্যে শিল্পকারখানা বাড়বে। নতুন নতুন বাস রুট হবে। শুরুতে এ জন্য লক্ষ্যমাত্রা কম ধরা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেতু বিভাগকে এই অর্থ ঋণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। ৩৫ বছরে ১ শতাংশ হারে সুদসহ তা ফিরিয়ে দিতে হবে। ২০১৯ সালের আগস্টে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও সেতু বিভাগের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। চুক্তি অনুসারে, প্রথম বছর পদ্মা সেতু থেকে ৪৬৮ কোটি টাকা আয় হবে। এর মধ্যে একটি অংশ টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ তহবিলের অর্থ ৩০০ কোটি টাকা। এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে না। ফলে সেতু বিভাগকে আসল হিসেবে ২৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সরকারকে ফেরত দিতে হবে। এর সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। অর্থাৎ সুদে–আসলে পরিশোধ করতে হবে ৩৬ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা।
বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সরকার বছরে গড়ে সাড়ে ৬০০ কোটি আয় করছে। এই সেতু দিয়ে দিনে প্রায় ২৪ হাজার যানবাহন চলাচল করে। ১৯৯৮ সালে চালুর পর এই সেতু দিয়ে দিনে দুই হাজারের কিছু বেশি যানবাহন চলাচল করত। দুই যুগে ১২ শতাংশের বেশি যানবাহন চলাচল বেড়েছে।
সেতু বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতুর আয় দুই–তিন বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতুকে ছাড়িয়ে যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন।