পঞ্চাশোত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের রয়েছে অবিনশ্বর ভূমিকা। তাঁর মতো অসাধারণ জ্ঞান, প্রজ্ঞা, সাহস ও বিনয়ের অধিকারী এ সমাজে বিরল। সমাজের সামনে যে আদর্শ তিনি রেখে গেছেন তা অনুসরণ করতে পারলেই কেবল তাঁর প্রতি সঠিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। চট্টগ্রামের বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান স্মরণসভা পরিষদ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে।
স্মরণসভায় প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বলেন, প্রকৃত অর্থেই হাবিবুর রহমান একজন মহাপুরুষ ছিলেন। জ্ঞানের প্রায় সব শাখাতেই তাঁর গভীর দখল ও পাণ্ডিত্য ছিল। একাধারে তিনি ছিলেন আইনজ্ঞ, ইতিহাসবিদ, দার্শনিক, সমাজবিজ্ঞানী।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেন বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস রচনায় যেসব ব্যক্তি অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন তাঁদের একজন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। কীর্তি, মনন ও প্রজ্ঞার ক্ষেত্রে বিরাট হয়েও তিনি সবকিছু সমতার দৃষ্টিতে দেখতে পারতেন।
জ্ঞান মানুষকে বিনয়ী করে, বিচারপতি হাবিবুর রহমান এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ধার্মিক হয়েও হাবিবুর রহমান ছিলেন প্রগতিশীল ও মানবিক। ১৯৯৬ সালে তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ সে সময়ে বড় বিপদ থেকে বেঁচেছিল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, তিনি আইনকে সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। মানুষের কল্যাণে আইনকে ব্যবহার করেছেন।
স্মরণসভা পরিষদের আহ্বায়ক কবি আবুল মোমেন বলেন, হাবিবুর রহমানের মধ্যে আকর গ্রন্থ রচনার প্রবণতা কাজ করত। তাঁর লেখা বইগুলো গবেষণা ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে বারবার রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহূত হবে। তিনি ছিলেন জীবনরসিক একজন মানুষ। কোনো চাপই তাঁর ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রে কখনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
আলোচনা ছাড়াও স্মরণসভায় বিচারপতি হাবিবুর রহমানের সংক্ষিপ্ত জীবনী ও কাজের কথা তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানায়।