পার্বতীপুরে তিন হাজার একর জমি বেদখলে
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বন বিভাগের মধ্যপাড়া রেঞ্জের প্রায় ছয় হাজার একর বনভূমির অর্ধেকই বেদখল হয়ে গেছে। সেখানে গড়ে উঠেছে গ্রাম, চলছে চাষাবাদ। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বনাঞ্চল ধ্বংস করে জমি দখল অব্যাহত রেখেছেন।
পার্বতীপুরে বন বিভাগের মধ্যপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শিকদার মাহফুজুল ইসলাম জানান, মধ্যপাড়া রেঞ্জে বন বিভাগের তালিকা অনুযায়ী ইতিমধ্যে ভূমি জবরদখলের আড়াই হাজার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় গত তিন বছরে প্রায় আড়াই শ মামলা করা হয়েছে।
দিনাজপুর বন বিভাগের বন মামলা পরিচালক দিলীপ কুমার পাল বলেন, বনের জায়গা দখল-সংক্রান্ত প্রায় ৭০০ মামলা এখন চলছে। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে বন বিভাগের বেশির ভাগ মামলায় সরকারের পক্ষে রায় পাওয়া যায় না।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া রেঞ্জের অধীন চারটি বিটে মোট বনভূমির পরিমাণ প্রায় পাঁচ হাজার ৮২৫ একর। এর মধ্যে পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া বিটে দুই হাজার ২৬ একর ও ভবানীপুর বিটে ৮১৪ একর এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ বিটে এক হাজার ১৭৮ একর ও আফতাবগঞ্জ বিটে এক হাজার ৮০৭ একর বনভূমি রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও বন বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, মধ্যপাড়া রেঞ্জের পাঁচ হাজার ৮২৫ একর বনভূমির মধ্যে দুই হাজার ৮০৮ একর ইতিমধ্যে বেদখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে মধ্যপাড়া সদর বিটের ৫১০ একর, কুশদহের ৬১৩ একর, আফতাবগঞ্জের এক হাজার ৫২৯ একর ও ভবানীপুর বিটের ১৫৬ একর জমি বেদখল হয়েছে।
মধ্যপাড়া বিট কর্মকর্তা সনাতন কুমার, কুশদহ বিট কর্মকর্তা আবদুল বারিক ও আফতাবগঞ্জের বিট কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন জানান, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত এখানকার সরকারি গজারি বন (শালবন) ধ্বংস করে স্থানীয় ও বহিরাগত বিপুলসংখ্যক মানুষ বসতবাড়িসহ আবাদি জমি করেছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক লোক চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কুষ্টিয়া জেলা থেকে এসেছেন। বকুল মাস্টার, হাকিম মাস্টার, আবদুর রাজ্জাক, নূর আলমসহ প্রভাবশালী কয়েকজন বনের জায়গা দখলের পর বনভূমির সরকারি গেজেট বাতিলের জন্য আদালতে সাত-আটটি মামলাও করেছেন বলে বন বিভাগের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।