পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও মাঠপর্যায়ে বাস্তব কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার সকালে এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর মাধ্যমে দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে প্রায় অর্ধশত বছরের পথযাত্রা পরিণতি পাচ্ছে।
তবে এই পরিণতির মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে আরও কঠিন ও জটিল এক পথচলা। পরিকল্পনা অনুযায়ী রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে কি না, তার পরিবেশগত প্রভাব কী হবে, কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, ব্যয় কেমন হবে—এসব জরুরি বিষয় নির্ধারণের জন্য অনেকগুলো সমীক্ষা করতে হবে। এ জন্য সময় লাগবে অন্তত দেড় বছর।
ওই সমীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই সমগ্র প্রক্রিয়ায় কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে রাশিয়ার পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন—রোস্যাটম। সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।
তবে দেশে দক্ষ জনবল তৈরি, স্থানীয় জনগণের সমন্বয়ে ‘পাবলিক কাউন্সিল’ গঠন প্রভৃতি অপরিহার্য কিছু কাজের জন্য সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরমাণু শক্তি কমিশনের (বিএইসি) ওয়েবসাইটে রূপপুর প্রকল্প সম্পর্কে হালনাগাদ কোনো তথ্য নেই। প্রকল্প এলাকা সম্পর্কে বার্ষিক পরিবেশ প্রতিবেদন প্রকাশ ও সে অনুযায়ী পরিবেশনীতি উন্নয়ন অপরিহার্য হলেও তা করা হয়নি।
প্রকল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও এখন পর্যন্ত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এমন কোনো কারিগরি পেশাজীবী দল গঠন করা হয়নি, যারা প্রকল্পটি সার্বিকভাবে তদারক করতে সক্ষম। মাঠপর্যায়ে যে সমীক্ষাগুলো করা হবে, তার কোনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। তাই আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের রাজনৈতিক প্রচারের জন্য তড়িঘড়ি প্রকল্পের কাজ শুরু করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ করছেন অনেকেই। ইতিমধ্যে বিলবোর্ডে এই প্রকল্পের প্রচারও শুরু করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও রাশিয়া থেকে আসা সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কোম্পানির কর্মকর্তারা তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। তবে সেখানে রূপপুর প্রকল্পের কোনো তথ্য রাখা হয়নি। অথচ অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত রূপপুর প্রকল্প সম্পর্কে জনগণকে জানানোর মতো অনেক তথ্য আছে।