দেশে এখন পর্যন্ত লাইসেন্স পাওয়া ৪০টি বেসরকারি টেলিভিশন (টিভি) চ্যানেলের অর্ধেক মরে যাবে অথবা চাঁদাবাজি করবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে এ কথা বলেই নীতি- সহায়তা চাইলেন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের মালিকেরা। সচিবালয়ে গতকাল মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো) অর্থমন্ত্রীর কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। সংগঠনের সভাপতি মোসাদ্দেক আলী নেতৃত্ব দেন এতে।
বক্তারা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হয়রানি বন্ধ, অভিনয়শিল্পীদের দ্বৈতকর প্রত্যাহার, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিল পাওয়ার পর কর প্রদান, ভারতীয় চ্যানেলের অবাধ সম্প্রচার বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ ইত্যাদি দাবি জানান। অর্থমন্ত্রী সব মিলিয়ে লিখিত একটি প্রস্তাব তৈরির নির্দেশ দেন অ্যাটকোকে।
চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, ১৫ বছরের কাগজপত্র ও সিডি চাচ্ছে এনবিআর। এসএ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনবিআর অত্যাচার করছে, হয়রানি করছে এবং এসএ গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসাবশত মামলা করছে।
সালাউদ্দিন আহমেদকে উদ্দেশ্য করে এ সময় কিছুটা ক্ষোভের সঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক সময় কথা বলতে গিয়ে আমরা বেশি বেশি বলে ফেলি। আপনার আচরণ ও বলার ধরন ঠিক নয়।’
চ্যানেল ২৪-এর এমডি এ কে আজাদ বলেন, ‘আমাদের তো জোর করে কেউ চ্যানেল দেয় না। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আমরাই তো মাথা কুটে মরি।’
মাছরাঙা টিভির চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী বলেন, এখনো দেশে সাদাকালো টিভিই বেশি। সাদা-কালো টিভিতে বড়জোর ২২-২৪টি চ্যানেল দেখা যায়। অথচ শুরু থেকে ২২ পর্যন্ত ভারতীয় চ্যানেল দিয়ে রাখে কেব্ল অপারেটররা।
সবার বক্তব্য শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মনে হয়েছিল শুধু কর নিয়ে অভিযোগ। এখন দেখছি অনেক বিষয়ই আছে। কিছু বিষয় আছে কখনোই বাদ যাবে না। যেমন অগ্রিম আয়কর (এআইটি)।’
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গাজী টিভির চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী, একাত্তর টিভির এমডি মোজাম্মেল হোসেন, সময় টিভির এমডি আহমেদ জোবায়ের, দেশ টিভির ডিএমডি আরিফ হাসান।
অর্থমন্ত্রীর পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গেও একই বিষয়ে বৈঠক করে অ্যাটকো। অ্যাটকোর নেতারা বাণিজ্যমন্ত্রীকে জানান, ভারতীয় চ্যানেল অবাধে চলছে। অথচ বাংলাদেশি চ্যানেল দেখাচ্ছে না ভারত। এ ক্ষেত্রে ভারত যেসব শর্তারোপ করে রেখেছে, বাংলাদেশও তাই করতে পারে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তবসম্মত ও করার মতো কোনো সমস্যা থাকলে সমাধান আমি করবই।’ তার আগে আন্ত মন্ত্রণালয়ের একটি সভা ডাকা দরকার বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী।