দেশের জন্য আন্তর্জাতিক মর্যাদা ও সম্মান নিয়ে আসার ধারা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘জনগণ যে সম্মান ও মর্যাদা পেয়েছে, তা যেন ধরে রাখতে পারি। আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বসভায় মর্যাদা নিয়েই চলতে চাই।’জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফিরে গতকাল সোমবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনাল লাউঞ্জে এক নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বিকেল পাঁচটা ৪০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।গত ২২ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। আট দিনের সফরে তিনি সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়া ছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। খাদ্যনিরাপত্তা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য শেখ হাসিনা সম্মানজনক সাউথ-সাউথ পুরস্কার লাভ করেছেন।প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার জন্য রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে বিপুল লোকসমাগমের কারণে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে বিকেলে অফিস শেষে ঘরমুখী মানুষ যানজটে বিড়ম্বনায় পড়েন। বিকেল থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে যানজট লেগে ছিল। বেলা তিনটার পরই নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেন। বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বেরিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান করা জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। এ ছাড়া ঢাকা সেনানিবাসের জাহাঙ্গীর গেট থেকে গণভবন পর্যন্ত মানুষ রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ভিভিআইপি লাউঞ্জে এসে বসেন। সেখানে তাঁকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। এরপর ক্রমান্বয়ে চিফ হুইপের নেতৃত্বে দলীয় সাংসদেরা, জাতীয় অধ্যাপক এম আর খান, সাংবাদিক রাহাত খান, রামেন্দু মজুমদার, সাম্যবাদী দলের পক্ষ থেকে শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ছাড়াও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের উপস্থাপনায় সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের যে এত সম্মান ও মর্যাদা, তা কেবল জনগণ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলে সম্ভব হয়েছে। মানুষ ভোট না দিলে তা সম্ভব হতো না।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নে জাতিসংঘে সবাই ভূয়সী প্রশংসা করেছে। এই সম্মান ধরে রাখতে হবে। তিনি বলেন, গত চার বছর নয় মাসে এমডিজির (সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্য) প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এগিয়ে রয়েছে। অনেকগুলো লক্ষ্যমাত্রায় অনেক আগেই পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি। বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে।’