দিন বদলে দিল টুপির কারখানা
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মাথাফাটা গ্রাম। এ গ্রামের অধিকাংশ মানুষের দিন কাটত অভাব-অনটনে। শুধু টুপি তৈরি করে আজ তাঁদের দিন বদলে গেছে, সংসারে এসেছে সচ্ছলতা। গ্রামের কারখানাতে বসেই প্রত্যেক শ্রমিক ছয় হাজার টাকা আয় করছেন। এ গ্রামে রয়েছে টুপি তৈরির পাঁচটি কারখানা। পরিচিতি পেয়েছে টুপির গ্রাম হিসেবে।
গ্রামবাসীর অনেকে জানান, ১৯৯৪ সালে এ গ্রামে ‘আল খাইয়্যাত ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে টুপি তৈরির প্রথম কারখানা স্থাপন করা হয়। গ্রামেরই বাসিন্দা আবদুল হান্নান এটি চালু করেন। এরপর তাঁর বন্ধু আবদুর রাজ্জাক ‘আল তামিম ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ’ নামে আরেকটি কারখানা স্থাপন করেন। এরপর একে একে ওসমান ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলিঙ্গন ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ, আল ইকরা ক্যাপ ইন্ডাস্ট্রিজ নামে তিনটি কারখানা গড়ে তোলা হয়। এসব কারখানায় প্রতিবছর দেড় লক্ষাধিক টুপি তৈরি করা হয়। প্রতিটি কারখানায় খরচ বাদে বছরে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।
কারখানার মালিকেরা জানান, বর্তমানে দুই শতাধিক শ্রমিক কারখানাগুলোতে কাজ করেন। কিছু টুপি জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।
তাঁরা জানান, মান ও আকার ভেদে একেকটি টুপি ৬০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি টুপি বিক্রি করে ১০-২০ টাকা লাভ হয়। প্রত্যেক শ্রমিক মাসে পাঁচ-ছয় হাজার টাকা আয় করেন। নারী শ্রমিকেরা সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে কারখানায় প্রতিদিন চার-পাঁচ ঘণ্টা কাজ করে বাড়তি আয় করতে পারেন।
কারখানার শ্রমিক উম্মে কুলছুম জানান, তিনি ও তাঁর স্বামী সুরুজ মিয়া প্রায় সাত বছর ধরে টুপি তৈরির কাজ করছেন। তাঁরা প্রতি মাসে প্রায় ১৩ হাজার টাকা আয় করেন।
আল ইকরার মালিক হারুন অর রশীদ বলেন, মূলধন-সংকট, ঋণ না পাওয়া এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে তাঁরা চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করতে পারছেন না। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ ও লোডশেডিংয়ের কারণে প্রায়ই উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়।