তবুও 'বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ'

নাসিরাবাদ কলেজের প্রধান ফটক। ছবিটি গত সোমবার তোলা l প্রথম আলো
নাসিরাবাদ কলেজের প্রধান ফটক। ছবিটি গত সোমবার তোলা l প্রথম আলো

ময়মনসিংহ শহরের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের ফটকে লেখা আছে ‘আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’। একইভাবে এ জেলার নাসিরাবাদ কলেজ, ঈশ্বরগঞ্জ কলেজ ও ফুলবাড়ীয়া কলেজের ফটকেও ‘বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ লেখা রয়েছে। তবে এগুলোর দাপ্তরিক নামের সঙ্গে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ শব্দটি নেই।
বিষয়টি সংশোধনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এক বছর আগে প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে কলেজ চারটির ফটকে বিশ্ববিদ্যালয় লেখা আছে। এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কোনো কলেজ ‘বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ ব্যবহার করতে পারবে না বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।
গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, ময়মনসিংহ শহরের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের ফটকে বড় করে লেখা আছে আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফটকের নামকেই সঠিক নাম বলে জানেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী। এ জন্য কলেজে প্রথমবার কোনো দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে তাঁদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ লেখা কোনো আবেদন কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে না। ফলে তাঁদের এক কাজ একাধিকবার করতে হয়।
এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মুখে মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ বলা হচ্ছে। আসলে নাম সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ।
শহরের নাসিরাবাদ কলেজের ফটকেও পিতলের অক্ষরে বড় করে লেখা ‘নাসিরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’। কলেজের কার্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, সব কাগজে লেখা আছে নাসিরাবাদ কলেজ। ২০১১-১২ সালে প্রথমবার সাতটি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হওয়ার পর কলেজের ফটকে নাসিরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ লেখা হয়। তখন অল্প কিছুদিন কাগজপত্রেও তা লেখা হয়। অধ্যক্ষ আশরাফ উদ্দিন বলেন, স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হওয়ার পর আনন্দের আতিশয্যে ফটক ও কাগজপত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ লেখা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোথাও ‘বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ’ ব্যবহার করা যাবে না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দাপ্তরিকভাবে নাসিরাবাদ কলেজ লেখা হয়। কিন্তু ফটকের নামটা বদলাতে একটু দেরি হচ্ছে।
ঈশ্বরগঞ্জ কলেজের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৫ সালে পাস কোর্স চালু হওয়ার পর ফটকে লেখা হয় ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে দুটি বিষয়ে সম্মান কোর্স চালু হওয়ার পর ফটকে লেখা হয় ঈশ্বরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, সম্মান কোর্স চালু হওয়ায় ফটকের নামটি বদলানো হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ ফটকের নাম বদলানোর বিষয়টি ভাবছে।
ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ফুলবাড়ীয়া কলেজেরও একই রকম চিত্র। অধ্যক্ষ নাসির উদ্দিন খান বলেন, ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে সাতটি বিষয়ে সম্মান কোর্স চালু হওয়ার পর ফটকে ফুলবাড়ীয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ লেখা হয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজ্ঞাপনের পর নামটি পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সরকার বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কোনো কলেজ কোথাও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ব্যবহার করতে পারবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট কলেজগুলোর মেনে চলা উচিত।