ঝোড়ো হাওয়াসহ বর্ষণের শঙ্কা
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’-এ পরিণত হয়েছে। এটি ক্রমেই শক্তি অর্জন করে আজ রোববারের মধ্যে ভারতের ওডিশা ও অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উপকূলে দমকা হাওয়ার আশঙ্কায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সে সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শনিবার রাত নয়টা থেকে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এ সময় সেটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম উত্তর–পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় গুলাব খুব বেশি শক্তিশালী হওয়ার আশঙ্কা কম। আর এর গতিমুখ ভারতের অন্ধ্র ও ওডিশা উপকূলে। তাই বাংলাদেশের জন্য এর কারণে খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে এর প্রভাবে আগামী দু-তিন দিন বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের কারণে সৃষ্ট মেঘমালা ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে ঢাকায়, ৫৩ মিলিমিটার।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা ডব্লিউএমও থেকে বিশ্বের বিভিন্ন সাগরে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়গুলোর সময় অনুযায়ী সম্ভাব্য নাম আগে থেকে ঠিক করে রাখা হয়। এই ঝড়ের নাম আগে থেকে পাকিস্তানের আবহাওয়াবিদেরা ঠিক করে রেখেছিলেন। পাকিস্তানের জাতীয় ভাষা উর্দুতে গোলাপকে ‘গুলাব’ বলা হয়।
এর আগে গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ভারতের ওডিশা উপকূলে আঘাত হানে। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও চরগুলোয় স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাস বয়ে যায়। তবে ঘূর্ণিঝড় গুলাবের কারণে বাংলাদেশ উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা তেমন নেই বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান জানান।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ময়মনসিংহে, ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গোপালগঞ্জে, ২৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ ৩৫ ও সর্বনিম্ন ২৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।